नियमित अपडेट के लिए सब्सक्राईब करें।
বিজয়লক্ষ্মী সিংহ | মহারাষ্ট্র
কখনও কখনও মানুষের জীবনে দুঃখের পাহাড় ভেঙে পড়ে। ভোপালের আরোরা কলোনীর পশ এলাকাতে ভাড়ার ছোট্ট একটা ঘরে থাকা কল্পনা বিশ্বকর্মার কাহিনীও ঠিক এমনই দুঃখের। এক পায়ে গ্যাঙ্গরীন হওয়ার কারণে আংশিক বিকলাঙ্গতা ও গর্ভবতী অবস্থায় থাকা কল্পনার জীবনে কোরোনা কাল অসংখ্য বিপদ ভিড় করে আসে। একদিকে যেমন তার শ্বশুর দ্বারকা প্রসাদ বিশ্বকর্মা কোরোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছিলেন তো অপরদিকে অটোচালক স্বামী সোনুর রোজগার লকডাউনের কারণে বন্ধ হয়ে পড়ে। গর্ভবতী অবস্থায় শ্বশুরের চিকিৎসার অর্থ জোগাড় কল্পনার জন্য ছিল অত্যন্ত কঠিন, সে তো নিজের জন্যই দু’মুঠো খাবারের ব্যবস্থা করতে পারছিল না। যখন তার এই দুঃসহ অবস্থার কথা ভোপাল সেবা ভারতীর মহানগর সংযোজিকা আভা দিদি জানতে পারেন তখন যেন সাক্ষাৎ ঈশ্বরের দ্বার সেবা ভারতী রূপে তাদের সামনে খুলে যায়। সেবার জন্য সংকল্পবদ্ধ সেবা ভারতীর কার্যকর্তারা কল্পনার পরিবারের সমস্ত দায়িত্ব গ্রহণ করে। প্রথমে তার শ্বশুরমশাইয়ের চিকিৎসার বিষয়ে অগ্রসর হলেও ওনাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি, ওনার অন্তিম সৎকার থেকে শ্রাদ্ধ পর্যন্ত সমস্ত কর্তব্য পালন করে। শুধু এইটুকুই নয় লকডাউন শেষ না হওয়া পর্যন্ত পরিবার চালানোর জন্য রেশন ও গর্ভবতী কল্পনার জন্য উপযুক্ত খাবারের ব্যবস্থাও করা হয়।
এই রকমই আরেকটি কাহিনী হল জ্যোতির, যার ৮বছরের মেয়ে মনীষা ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিল। ইন্দৌরের বন্যা কলোনীতে বসবাসকারী জ্যোতি বিভিন্ন বাড়িতে বাসন মেজে নিজের সংসার চালাতো আর তার স্বামী ছিল রিক্সাচালক। লকডাউনে দু’জনেরই কাজ চলে যায়। ক্যান্সারে আক্রান্ত ছোট্ট মেয়েটা যখন ক্ষুধার জ্বালায় ছটফট করতে থাকে তখন জ্যোতি ইন্দৌরের সেবা ভারতী হেল্প লাইনে প্রান্ত সংযোজিকা সুনীতা দিদির কাছে খাবারের প্রয়োজনীয়তার কথা জানায়। সুনীতা দিদি বলেন যে, আজও তিনি সেই দিনের ফোনের মধ্যে জ্যোতির মর্মস্পর্শী কান্না ভুলতে পারেননি। রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের স্বয়ংসেবকেরা সম্পূর্ণ লকডাউন কালে পরিবারটিকে রেশনের সাথে সাথে যথাসম্ভব সব রকমেরই সহযোগিতা করে।
“ম্যায় রহুঁ ইয়া না রহুঁ, ভারত ইয়ে রহেনা চাহিয়ে”
মণিকর্ণিকা সিনেমার বিখ্যাত গানটি যেন স্বয়ংসেবকদের জন্যই লেখা হয়েছে। সীধী জেলার জেলা সেবা প্রমুখ আশিষজীর কাহিনী শুনলে তো ঠিক তেমনই মনে হয়। কোরোনা কালে লাগাতার সেবা কাজ করতে করতে তিনি যখন কোরোনা পজিটিভ হয়ে রেবাস্থিত কুশাভাউ ঠাকরে হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে লড়াই করছিলেন ঠিক তখনই একজন নীর্সের কাছ থেকে খবর পান যে, একজন মুমুর্ষ রোগীর কয়েক ঘণ্টার জন্য অক্সিজেন সিলিণ্ডারের খুব প্রয়োজন। আশিষজী নিজের বিপদকে উপেক্ষা করে ৩ঘণ্টার জন্য সেই রোগীকে সিলিণ্ডার দিয়ে নিজে কর্পূরের সাহায্যে কৃত্রিম উপায়ে শ্বাস নিতে থাকেন। বর্তমানে আশিষজীও সুস্থ এবং সেই মহিলা রোগীও সুস্থ যার জন্য তিনি জীবনের বাজি লাগিয়ে ছিলেন।
মধ্যক্ষেত্রের ক্ষেত্র কার্যবাহ অশোক আগরওয়াল বলেন যে, পুরো ক্ষেত্রের মধ্যে সবরকম পরিস্থিতিতে স্বয়ংসেবকেরা সমাজের সাথে দাঁড়িয়ে থাকে। ৫৮৯টি হেল্পলাইন সেণ্টার, ১২৩টি আইসোলেশন সেণ্টার, ১৭টি কোভিড কেয়ার সেণ্টারের সাথে সাথে ৬৪৯টি স্থানে ৪০৬২৪টি ভোজন প্যাকেট বিতরণের মত কাজে ১১০৭৭জন কার্যকর্তা নিষ্ঠা সহকারে সহযোগিতা করেন।
রতলামের পাঞ্চের গ্রামে একশ ভাগ ভ্যাক্সিনেশন করিয়ে স্বয়ংসেবকেরা কীর্তিমান স্থাপন করেন। যখন তাদের গ্রামে কোরোনাতে মৃতের সংখ্যা ৩০ পাড় হয়ে যায় সেসময় সেখানকার বহুবছরের পুরানো শাখার তরুণ স্বয়ংসেবকেরা গ্রামকে কোরোনা থেকে সুরক্ষিত রাখার জন্য সংকল্প নেন। প্রথমে গ্রামে সম্পূর্ণভাবে যাতায়াত বন্ধ করা হয়, যে কারণে সংক্রমণের হার শূণ্যতে পৌঁছায়। পরে পুরো গ্রামের ভ্যাক্সিনেশনের উপযোগী প্রত্যেককে ভ্যাক্সিনেশন ক্যাম্পে নিয়ে গিয়ে ভ্যাক্সিন দেওয়ানো হয়।
কোরোনার এইবারের প্রকোপ দুর্গম জঙ্গলেও দেখা দেয়। মধ্যপ্রদেশের খাণ্ডবা জেলায় মহামারী প্রতিরোধের জন্য একটি নতুন সফল প্রয়োগ করা হয়। খাণ্ডবার বিভাগ সেবা প্রমুখ অতুল শাহজীর কথা অনুযায়ী সেইসব বনবাসী এলাকাতে কেউই হাসপাতালে যেতে রাজী ছিল না, এমনকি কোরোনা পরীক্ষা করাতেও না। সর্দি, কাশি, জ্বরে মৃত্যুর হার ক্রমশ বাড়ছিল। এইমত অবস্থায় ইন্দৌরের বিখ্যাত গোকুলগাস হাসপাতালের অভিজ্ঞ ডাক্তারেরা গ্রামীণ ডাক্তারদের অনলাইনে প্রশিক্ষণ দেন যাতে করে তারা গ্রামেই কোরোনা পরীক্ষা করাতে পারেন এবং তার সাথে সংগঠনের মাধ্যমে প্রাথমিক চিকিৎসা ঔষধাদির ব্যবস্থাও করা হয়। এই গ্রামীণ ডাক্তারদের মাধ্যমে গুড়ি, সিঙ্গোট, বোরগাঁও, গুলাঈ মাল, রোশনী, পটাজন, ঝিঞ্ঝরী, গোলখেড়া, ঝুম্মরখলী এবং আসপাশের অন্য গ্রামে ১৪টি ওপিডি লাগাতার বনবাসী এলাকাতে পরীক্ষা ও প্রাথমিক চিকিৎসা করে, যার কারণে হাজারো বনবাসীর প্রাণ বাঁচানো সম্ভব হয়।
नियमित अपडेट के लिए सब्सक्राईब करें।