नियमित अपडेट के लिए सब्सक्राईब करें।
প্রবীর রায় | ভারত
একটি ছোট্ট ঘরে টিবির মতো মারাত্মক রোগে আক্রান্ত একটি ১১বছরের ছোট্ট ছেলে
সোনু, কোনোভাবে রয়েছে। তার ৬
বছরের বোন খুশবুর সাথে কোথাও থেকে ডাল চেয়ে নিয়ে এসে জল দিয়ে ছোকার জন্য
প্রস্তুতি নিচ্ছিল। তারপর রীনা দিদি যখন কিশোরী বিকাশ কেন্দ্রের মেয়েদের সাথে
রেশন সামগ্রী নিয়ে তার কাছে পৌঁছাল, তখন সোনু আনন্দে আত্মহারা হয়ে যায়। এ তো
মাত্র শুরু, আগ্রার বস্তিতে থাকা এই অনাথ ভাই-বোনদের দেখাশোনার পাশাপাশি শিক্ষা ও চিকিৎসার ব্যবস্থাও করছেন আগ্রা সেবাভারতী মাতৃমণ্ডলীর দিদিরা।
এই বোনেরা পরিযায়ী শ্রমিক পরিবারের
নারীদের দুর্দশাও বুঝতে পেরেছিলেন, যা কিনা তারা নিজ মুখে কাউকে বলতে পারেনি। অর্থের দুরবস্থা, বহু মাইল পথ অতিক্রম করা
আর তার ওপরে ঋতুস্রাবের সমস্যা, এই ছিল শ্রমিক মহিলাদের অবস্থা। সেবাভারতী সংরক্ষিকা আগ্রার
ডঃ রেণুকা উৎসবের সহায়তায়, রীনা সিং- সেবাভারতী
মাতৃমণ্ডলীর বৌদ্ধিক প্রমুখ এবং ওনার সাথে মমতা সিং, সুপ্রিয়া জৈন, অঞ্জলি গৌতম, এবং সুস্মিতা সিং -এর এই দল, বিনামূল্যে স্যানিটারি
ন্যাপকিন সরবরাহ করে বাসস্ট্যাণ্ড এবং বস্তিতে বসবাসকারী দরিদ্র মহিলাদের জন্য
ন্যাপকিন বিতরণের জন্য রওনা হন। আগ্রা এবং এর পার্শ্ববর্তী ১২৭টি বস্তিতে ২০,০০০ মহিলাকে ন্যাপকিন
বিতরণ করে এবং করোনার সময় সুস্থ থাকার নানা পরামর্শও দেন।
বলা হয়, যখন একজন মা তার স্নেহের আঁচল বিছিয়ে দেন, তখন সমগ্র বিশ্ব তার
মধ্যে সমাহিত হয়ে যায়। সারাদেশে সেবাভারতীর মাতৃমণ্ডলীর মহিলারা কোরোনার সময়
বিপর্যস্ত মানুষদের রেশন দেওয়া থেকে শুরু করে মাস্ক, পিপিই কিট বিতরণ এবং ছাতু, আচার, পাপড়, রাখী বানানো এবং করোনা
পজিটিভ রোগীদের জন্য একটি হেল্পলাইন তৈরি করে চালানোর মতো অনেক কিছু কাজ করেন।
এখন ত্রিপুরার ধনপুরের বাসিন্দা মীরা
সাহের বিষয়ে আসা যাক, যিনি করোনার সময় তার স্বামীর মৃত্যুর পরে নিজে হতাশার সাথে
লড়াই করে, "গঙ্গা সেবা সংস্থা"-এর অধীনে ২৫
জন বোনকে মাস্ক এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় পোশাক সেলাইয়ের প্রশিক্ষণ দেন।
দিনরাত মাস্ক তৈরি করার ফলেই এইসব বাড়ির উনুন জ্বলে।
আসলে, মাঙ্গিলাল (একজন বৃদ্ধ ভিক্ষুক) সোলাপুরের
উদ্যোগবর্ধিনীর রান্নাঘর থেকে প্রতিদিন ১০ টাকায় এক প্লেট খাবার নিতেন, কিন্তু লকডাউনের সময় যখন
তিনি দু'প্লেট খাবার নিতে শুরু
করেন, তখন চন্দ্রিকা
তাই(দিদিমা) দেখেন যে, ভিক্ষা করে যে টাকা পান,তাই দিয়ে তিনি অন্য ভিক্ষুকদেরও খাবার দিচ্ছেন।
এটা দেখে মাতৃহৃদয় করুণাতে ভরে ওঠে, রাষ্ট্রীয় সেবাভারতীর ট্রাস্টি বোর্ডের
যুগ্ম-সচিব চন্দ্রিকা চৌহান আশেপাশের সব মন্দিরের ভিক্ষুক,
বস্তির অসহায় প্রতিবন্ধী, ঘরে বসে থাকা বৃদ্ধদের
বিনামূল্যে খাবার দিতে শুরু করেন। লকডাউনের সময়কাল ২৬শে মার্চ থেকে টানা চার মাস
ধরে, এই সেবাব্রতী মহিলারা
২৫০জনেরও বেশি মানুষকে বিনামূল্যে এবং কয়েকশ অভিবাসী শ্রমিককে মাত্র ২০ টাকায়
খাবার সরবরাহ করেন।
সঙ্ঘের সংস্কারে গড়ে ওঠা এই মহিলাদের
সেবা যাত্রা নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে, সেবাভারতীর রাষ্ট্রীয় সহ-সভাপতি অমিতা জৈন
ভোপালের ৮২বছর বয়সী হরিদিনী যোশী এবং ৮০বছর বয়সী প্রকাশ খানুজার উদাহরণ দেন, যিনি এই বয়সেও দিনরাত
মাস্ক সেলাই করে বিনামূল্যে বিতরণ করেন ।
ভাইয়েদের হাত যেন খালি না থেকে যায়
বোনেদের এই চিন্তা দূর করতে, ৬৫বছর বয়সী আরতি দিদি, সবিতা দিদিদের ব্যবস্থায় বুরহানপুরের বোন
মেঘার দেওয়া রাখী, চাল, নারকেল ধন্বন্তরী কলোনীতে তাদের ভাইয়েদের কাছে পৌঁছে দেয়।
মালওয়া প্রান্তের ৯টি শহরে, বোনেরা শুধু রাখী তৈরি করে দুঃস্থ মহিলাদের কেবল আয়ের উৎসই দেয়নি, উপরন্তু ইন্দোরে ভাইদের কাছে বোনদের রাখী পৌঁছে
দিয়ে, তারা রক্ষাবন্ধন উৎসবটিকে অবিস্মরণীয় করে তোলে, যা একটি হটস্পট কেন্দ্র
হয়ে ওঠে ।
সেবাভারতী মাতৃমণ্ডল মালওয়া
প্রদেশের সংযোজক সুনিতা তাই বলেন, লকডাউনের সময় বোনেরা নানান ধরনের খাবার, যেমন আলুর চিপস, আমের পাঁপড়, রসুনের আচার, মিনি সামোসা ইত্যাদি ভাল
প্যাকেজিং সহ বিক্রি করেছিল এবং করোনার সময় নিজেই "মা অন্নপূর্ণা স্বয়ং
সহায়তা সমূহ"(সেল্ফ হেল্প গ্রুপ) তৈরি করে অনেক পরিবারকে আর্থিক সমস্যা থেকে
উদ্ধার করে।
জম্মু ও কাশ্মীরের নাগরৌটার উদাহরণও
এর থেকে আলাদা নয়, লকডাউনের সময় যখন আর্থিক সঙ্কট আরও ভয়াবহ হয়ে ওঠে, সেইসময় বাস্তুচ্যুত
কাশ্মীরি পণ্ডিতদের জন্য প্রতিষ্ঠিত জগতি কলোনীর পরিবারগুলিকে সাহায্য করার জন্য
অঞ্জলি দিদির নেতৃত্বে প্রায় ১০০টি পরিবারের বোনেরা সেলাই করা মাস্ক এবং পিপিই
কিট, আচার ইত্যাদি বিক্রি করে
সংসার খরচ চালান।
করোনার সময় আমাদের বোনেরা কোরোনা
পজিটিভ রোগীদের ফোন করে তাদের সমস্যা সমাধান এবং তাদের মনোবল বাড়ানোর কাজও করেন।
একজন নিঃসঙ্গ ৭০বছর বয়সী মহিলা, তার ফোনে ২দিন ধরে রিচার্জ ফুরিয়ে যাওয়া নিয়ে চিন্তিত
ছিলেন, যখন তিনি ফোনে অপরিচিত
মহিলার মিষ্টি কণ্ঠস্বর শুনতে পেলেন, — কেমন আছেন ?
আপনার কোনো সমস্যা হচ্ছে না তো ?
তার মনে হল যেন ভগবান স্বয়ং তার যত্ন নিচ্ছেন।
ভোপাল মহানগরের মহিলা সহ সংযোজিকা আভা
পাণ্ডে দিদি এবং তাঁর মাতৃমণ্ডলীর বন্ধুরা, "সেবা ভারতী দূরভাষ মিত্র অভিযান" এর
প্রশংসনীয় কর্মসূচির মাধ্যমে কোরোনা আক্রান্ত রোগী, সন্দেহভাজন ব্যক্তি এবং বয়স্ক ব্যক্তি সহ মোট
১৪০০জন ব্যক্তির তালিকা প্রশাসনের কাছ
থেকে পেয়ে, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ফোন রিচার্জ, ওষুধ পৌঁছে দেওয়া, কোরোনা আক্রান্ত পরিবারের কাউন্সিলিং করে
অনেকের মনের হতাশা দূর করে।
সারা দেশে সেবা কাজে রত সেবাভারতীর
বোনেরা কিছু জায়গায় চিকিৎসা সম্বন্ধীয় হেল্পলাইনও চালান। তেলেঙ্গানার যুগ্ম সচিব, জয়প্রদা দিদি বলেন -
হায়দ্রাবাদের সেবা ভারতীর কোভিড হেল্পলাইনে কল সেণ্টারে ৫০জন কিশোরী এবং মহিলার
একটি দল রয়েছে, যারা ডাক্তারদের সহযোগিতায় সর্দি, কাশি, জ্বর ইত্যাদির জন্য বাড়িতেই লোকেদের চিকিৎসা প্রদান করে। গর্ভবতী মহিলাদের জন্য নিরাপদ হাসপাতালের পথ দেখায় এবং স্বয়ংসেবক দাদাদের সহায়তায়
৫০০জনেরও বেশি কোরোনা আক্রান্ত রোগীকে বাড়িতেই কোরোনা কিট তৈরি করে পাঠানো হয়।
ইতিহাস সাক্ষী রয়েছে, সময় যখন যখন নারীর ধৈর্যের পরীক্ষা নিয়েছে, নারীরা সাহসিকতার সাথে
তার সম্মুখীন হয়ে নতুন শক্তির জন্ম দিয়েছে। সারাদেশে চলমান কোরোনা সঙ্কটে
রাষ্ট্রীয় সেবা ভারতী, মাতৃমণ্ডলির নারীরা কারও মা, কারও বোন বা কারও মেয়ে হয়ে দুর্দশাগ্রস্ত
মানুষদের সহায়তা করেছেন, এনাদের সাথে সম্পর্কিত সেবা কাহিনী অব্যাহত থাকবে।
পরের গল্প পরবর্তী
সংখ্যায়।
नियमित अपडेट के लिए सब्सक्राईब करें।