नियमित अपडेट के लिए सब्सक्राईब करें।
বিজয়লক্ষ্মী সিংহ | মহারাষ্ট্র
যেমন ডুবতে থাকা মানুষের কাছে একটি খড়ের টুকরো অনেক আশা যোগায়, ঠিক তেমনি গুজরাতের কচ্ছে ভয়ংকর ভূমিকম্পে বিপর্যস্ত হয়ে আটকে পড়া জনজীবনের কাছে জীবন সর্বস্ব হয়ে উঠেছিল বাঁশ। মহারাষ্ট্রের অমরাবতী জেলার লবাদায় সম্পূর্ণ বাঁশ দিয়ে তৈরি জিনিসপত্রের একটি কেন্দ্র চালান শ্রী সুনীল দেশপান্ডে ও তাঁর স্ত্রী নিরুপমা দেশপান্ডে। সংঘের স্বয়ংসেবকদের সাহায্যে কচ্ছতে তাঁরা এমন কিছু করে দেখিয়েছেন যেটা সেই বনবাসী এলাকায় উপলব্ধ সাধারণ বাঁশ গাছকে ভূমিকম্প পীড়িত মানুষজনের কাছে সঞ্জীবনী শক্তি বানিয়ে দিয়েছিল।
আমাদের কেউই হয়তো ২৬ শে জানুয়ারি ২০০১ সালে গুজরাটে হওয়া সেই ভয়ানক ভূমিকম্পের কথা ভুলিনি, যেখানে প্রায় কয়েক হাজার মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছিল। অবস্থা এমন হয়েছিল যে মানুষ এভাবে আটকা পড়েছিল যে ধ্বংসস্তূপের থেকে নিজেদেরকে সরাতেই চাইছিল না কারণ কারও সোনা গয়না, কারও সম্পত্তি, কারও টাকাপয়সা ও দলিলপত্র মূল্যবান সামগ্রী ধ্বংসস্তূপের তলায় চাপা পড়ে গিয়েছিল। তাই প্রশাসনের অনেক প্রচেষ্টার ফলেও মানুষ সেই ধ্বংসস্তূপের কাছ থেকে এক ইঞ্চিও সরতে চাইছিল না। এরকম বিকট পরিস্থিতিতে সুনীলজীর সাথে আরও ৪৫ জন লোকের একটি দল কচ্ছতে পৌঁছায়। এই দলটি স্থানীয় স্বয়ংসেবকদের সহায়তায় এক বছর সেখানে থেকে সমস্ত পরিবারের জন্য একটি করে বাঁশের তৈরি বাড়ি (যাকে গুজরাটি ভাষায় ভূংগে বলা হয়) বানিয়ে একটি অসাধারণ ব্যবস্থা করেন। বাঁশের তৈরি ভূমিকম্পরোধী এই ৭৪২ টি অদ্ভুত বাড়ির মধ্যে কয়েকটিতে আবার হাসপাতাল, বিদ্যালয়ও চলত। এগুলির উদ্বোধন করেছিলেন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের তৎকালীন সরসঙ্ঘচালক পরমপূজনীয় শ্রী সুদর্শন জি। শ্রী সুনীল দেশপান্ডে একসময় চিত্রকুটে নানাজীর সহযোগী ছিলেন এবং ইনার পত্নী নিরুপমাজী সবসময় প্রত্যন্ত গ্রামে বসবাস করা বনবাসীদের মধ্যে কাজ করতে চাইতেন এবং তাদেরকে স্বনির্ভর বানাতে চাইতেন। এজন্য তারা এই কাজটিকেই বেছে নিয়েছিলেন এবং ১৯৯৪ সালে মহারাষ্ট্রের মেলঘাট জেলার লবাদার এই জায়গায় বনবাসীদের নিয়ে একটি সম্পূর্ণ বংশ শিল্প কেন্দ্র স্থাপনা করেছিলেন।
আজ এই কেন্দ্র বনবাসী নবজাগরণের ক্ষেত্রে বর্তমানে অভূতপূর্ব কাজ করছে। এলাকার ৩৮ টি গ্রামের প্রায় ২৫০ এর বেশি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর দ্বারা তৈরি বাঁশের সামগ্রী বাণিজ্যিকরণ করে এই সংস্থা অসংখ্য পরিবারকে লাভজনক ব্যবসার রাস্তা দেখিয়েছেন ও মানুষের আনন্দ-পূর্ণ জীবন যাপন করবার সুযোগ করে দিয়েছেন। বাঁশ দিয়ে তৈরি অনেক রকমের শিল্পকলা ও বাসভবন নির্মাণ কর্মের বিস্তারের ফলে এই এলাকার স্বনির্ভরতার সূচক ঊর্ধ্বগামী হয়েছে। সুনীল দেশপান্ডেজী বলেন "এই আদিবাসীদের মধ্যে ইতিবাচকতা ফিরিয়ে আনা এবং এদের অপরের মুখাপেক্ষী না থেকে স্বনির্ভর ও সক্ষম বানানোই আমাদের প্রচেষ্টা"। যেমন মসমল গোড়েলাল অহিরিয়া, যিনি ভীল সম্প্রদায়ের একজন আদিবাসী, ইনি অষ্টবক্র ছিলেন অর্থাৎ তার শরীরের আটটি অঙ্গ বাঁকা ছিল। তিনি বিগত ১৩ বছর ধরে এই কেন্দ্রে কাজ করছেন। এক সময় তিনি নিজের পরিবারের পালন পোষণ করতে অসমর্থ্য ছিলেন কিন্তু বর্তমানে তিনি এতটাই উপার্জন করেন যার ফলে সম্পূর্ণ পরিবারের ব্যয় ভার একাই বহন করছেন। শুধু তাই নয় তিনি ২০ জন অন্ধ মানুষকে বাঁশ শিল্পের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। ঠিক এরকমই গল্প পোলিও রোগগ্রস্ত সোহনলাল কন্দেকরের, যিনি আদিবাসী কোর্কু সম্প্রদায়ের একজন প্রতিবন্ধী। গোরেলালজির সঙ্গে ইনিও এই কেন্দ্রের একজন প্রশিক্ষক হিসাবে বর্তমানে কর্মরত রয়েছেন। বাঁশ দিয়ে বাসভবন নির্মাণের পাশাপাশি অন্যান্য শিল্পকলা ও গবেষণার উপরেও বিশেষ দৃষ্টি দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে বেণু শিল্পী ব্যবসায়িক কো-অপারেটিভ সোসাইটির মাধ্যমে বনবাসীদের দ্বারা বানানো এই বাঁশ দিয়ে তৈরি শিল্প সামগ্রির বাজারীকরণ ও ব্র্যান্ডিং করা হচ্ছে। এর সঙ্গে সঙ্গেই এই কেন্দ্র বংশ শিল্পীদের প্রশিক্ষণকে শিক্ষাগত মান্যতা ও বাঁশের নতুন প্রজাতির উপর গবেষণা করা ইত্যাদি শিক্ষামূলক বিষয়ে আগ্রহের সাথে কাজ করে চলছে। এখন এই কেন্দ্র আর্থিক দিক থেকে নিজেদের স্বাবলম্বী করে তুলেছে। স্বচ্ছ ভারত অভিযানের অন্তর্গত প্রকল্পে এই কেন্দ্র বাঁশ দিয়ে তৈরি স্থানান্তরযোগ্য শৌচালয় বানিয়ে সবাইকে আশ্চর্য করে তুলেছে।
সম্পর্ক সূত্র : সহদেব দাদুজি
সম্পর্ক সংখ্যা : ৯৭৬৪৬৩৪৫১১
नियमित अपडेट के लिए सब्सक्राईब करें।