सब्‍सक्राईब करें

क्या आप ईमेल पर नियमित कहानियां प्राप्त करना चाहेंगे?

नियमित अपडेट के लिए सब्‍सक्राईब करें।

কঠোর পরিশ্রমে সামাজিক উত্থান (রাজস্থান, অনুপগড়)

প্রবীর রায় | অনুপগড় | রাজস্থান

parivartan-img

  1. যারা একসময় আবর্জনা কুড়িয়ে সংসার চালাত সেই সমস্ত বস্তির পুরুষেরা এখন বাজারে ঠেলা গাড়ি (দোকান) লাগিয়ে এবং সেলুন দোকান খুলে সম্মানের সাথে জীবনযাপন করছে।

সিঁথিতে সিঁদুর, হাতে মেহেন্দি আর লাল বসনে সজ্জিত রাখি, ঊষা ও সীমারা আজ নতুনভাবে জীবনকে উপভোগ করছে। সেবা ভারতী (অনুপগড়) আয়োজিত গণবিবাহ অনুষ্ঠানে বধূ হওয়া এই মেয়েরা একসময় যে গলিতে ভিক্ষা করত, আর সেই গলি দিয়েই সেই মেয়েদের যখন বিয়ের সানাই বাজল তা দেখে শুধু তাদের বাবা-মা'ই নয়, এলাকার মানুষজনও  সেবাভারতীর কার্যকর্তাদের ওপর আশীর্বাদের ফুল বর্ষণ করল। অনুপগড় সেবাভারতী স্বনির্ভর কেন্দ্র, ভিক্ষাবৃত্তি কারী পরিবারের এই মেয়েদের সেলাই, মেহেন্দী, পার্লার এবং অন্যান্য রোজগারমুখি প্রশিক্ষণ দিয়ে স্বনির্ভরতার পথ দেখিয়েছে। যে সীমা একসময় নিজের পেটের টানে অন্যের কাছে হাত পাততো আর নানা ধরনের তিরস্কার, অপমান সহ্য করত, সে এখন ওই বাড়িগুলোতে নতুন কনের পছন্দসই মেহেন্দি পরানোর পরিচিতি পেয়েছে। পুনম বছরের পর বছর মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ডাল চেয়ে বেড়াত, তাই লোকে তাকে 'ডাল' বলেই ডাকত। আজ, সেই পুনম স্বনির্ভরতা কেন্দ্রে টেইলারিং শিখে পুনম বুটিকখোলার প্রস্তুতি শুরু করেছে৷


সেবা ভারতী দ্বারা আয়োজিত একটি গণবিবাহ কার্যক্রমে বস্তির চার কন্যার বিয়ে অত্যন্ত ধুমধামের সাথে সম্পন্ন করা হয়।

অনুপগড়ে সাঁসি, বিহারী, ঢোলি, বাজিগর বস্তির প্রায় ১১০টি পরিবার রয়েছে। যারা একসময় রাস্তায় আটা-ডাল-ভাত ভিক্ষা করত, নোংরা আবর্জনার দিকে চেয়ে থাকা তাদের হাত ও চোখ, সমাজের মূল স্রোত থেকে অনেক দূরে তারা তাদের নোংরাঅন্ধকার জীবন নিয়েই দিন কাটাত।

আজ, সেবা ভারতী যোধপুর প্রান্ত স্বাবলম্বন প্রমুখ শ্রী দিনকর পারীক এবং ক্ষেত্র প্রশিক্ষণ প্রমুখ শ্রী গোবিন্দ কুমারের সাত-আট বছরের প্রচেষ্টায়, এই সমস্ত পরিবারগুলি জীবনের মঞ্চে কঠোর পরিশ্রম করে সসম্মানে বাঁচতে শিখেছে। যে মালি ফুল লাগায় সে কখনো বুঝতে পারে না যে ফুলের সুগন্ধ কতদূর ছড়াবে।

অষ্টম শ্রেণীতে অধ্যয়নরত অনাথ রাম, স্বয়ংসেবকদের সহযোগিতায় সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পেয়ে তার নিজের দক্ষতাতে নিজের ভবিষ্যত পথ গড়ে তুলছে। পড়াশোনার পাশাপাশি, গ্যারেজে গাড়ির সিট তৈরির কাজে সিদ্ধহস্ত হওয়ায় প্রতি মাসে ৭০০০ টাকা আয় করছে। এই বস্তিরই সীমা ফিজিওথেরাপিস্টের প্রশিক্ষণ নিচ্ছে আর সুনীতা বিএ পড়তে পড়তে শিশুদের টিউশন পড়াচ্ছে।


অনুপগড়ের ১৭টি স্বনির্ভরতা কেন্দ্রে মহিলারা সেলাই শিখে সারা বছর ধরে প্যান্ট, ব্যাগ, পতাকা এবং ল্যাঙ্গট ইত্যাদি সেলাই করে তাদের পরিবারে আর্থিক সহযোগ করছে।

গোবিন্দজি বলেন, অজ্ঞতার অন্ধকারে ডুবে থাকা, মদের নেশায়, দিনে দু'বেলা খাবারের সন্ধান করতে থাকা এই বস্তির লোকেরা তাদের সন্তানদের লেখাপড়ার চিন্তা থেকে অনেক দূরে ছিল। কার্যকর্তাদের নিরলস প্রচেষ্টায় এখন ২৫০ র অধিক শিশু পাশের সরকারি স্কুলে পড়াশোনা করছে। শ্রীমতী জয় বিজয় চৌধুরী (ব্লক সভাপতি, মহিলা মণ্ডল অনুপগড়), যিনি কিশোরী কেন্দ্রগুলিতে কিশোরীদের প্রশিক্ষণে বিশেষ দৃষ্টি দেন, তিনি তার সেবা কাজের সময় খুব কাছ থেকে বস্তিগুলিতে মহিলাদের মধ্যে হওয়া অবস্থার উন্নতিগুলোর প্রত্যক্ষ সাক্ষী হয়ে থাকছেন। সেবা ভারতী স্বাবলম্বন কেন্দ্রের মাধ্যমে এখানে সারা বছর ধরে ১৭ টি প্রকল্প চলে। যেখানে মহিলারা সেলাই শেখার পাশাপাশি ব্যাগ, ল্যঙ্গট, প্যান্ট, পতাকা নিয়মিত সেলাই করে চলেছে। শ্রাবণ মাসে  রাখি তৈরি করে, দীপাবলিতে প্রদীপ ও লক্ষ্মী-গণেশের মূর্তি তৈরি করে বস্তির মহিলারা পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতা করছে।


এই গল্পের সূত্রপাত ৮ বছর আগে, যখন সঙ্ঘের স্বয়ংসেবক দিনকর পারীক একটি বাসে অনুপগড় থেকে দিল্লি যাচ্ছিলেন। সেসময় জানালা দিয়ে নিষ্পাপ দুই শিশুকে ডাস্টবিন থেকে কিছু খাবার তুলতে দেখেন। ঠিক সেসময়ই তিনি বাস থেকে নেমে যান। ওনার বেদনা এবং এই বস্তির মানুষদের জন্য কিছু করার প্রবল ইচ্ছাই এক দীর্ঘ সেবা যাত্রার জন্ম দেয়। ভজন সন্ধ্যা ও সংস্কারশালার মাধ্যমে শুরু হওয়া কাজ আজ স্বনির্ভরতার মাধ্যমে প্রতিটি ঘরে সম্মান বাড়িয়ে তুলছে।

দিনকর দা এবং রামরত্ন মহাশয়ের (ব্লক সভাপতি, অনুপগড়) প্রচেষ্টায় এই বস্তিগুলিতে আইনি সচেতনতা শিবিরের আয়োজন করা হয়েছিল, যার দরুন এই পরিবারগুলি পরিচিতি লাভ করেছে। চার কন্যার পিতা প্রতিবন্ধী পবনের মতো আরও পাঁচটি পরিবার, যারা মেয়েদেরকে বোঝা বলে মনে করত, তারা এখন সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পেয়েছে। স্কিল ডেভেলপমেন্ট এর আওতায় পুরুষদের সেলুন চালানোর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। আজ তারা নিজের দোকান খুলে, জেলের কয়েদি কিংবা বিএসএফ জওয়ানদের চুল কেটে সম্মানজনক জীবিকা নির্বাহ করছে। প্রতিবন্ধী পবনও একটি ছোট্ট সেলুন দোকান খুলেছেন।


তুমি পা বাড়াও রাস্তা নিজে থেকেই দেখতে পাবে।' সোমদত কাচোরিয়া (জেলা সহ-সম্পাদক, সুরতগড়) বলেন যে তারা তাদের বাচ্চাদের স্কুলে পাঠাবেন, কাজ করার সময় নেশা করবেন না এবং নিজের অ্যাকাউন্টে প্রতি মাসে এক হাজার টাকা সঞ্চয় করবেন। এই তিনটি শর্ত পূরণকারী যুবকদের ঠেলা গাড়ি বিতরণ করা হয়। এদের মধ্যে রয়েছে রাকেশ, কালুরাম, ওমজি এবং পবন ঢোলি যাদের মধ্যে কেউ ড্রাম বাজায়, কেউ মুচির কাজ করে আর কেউ প্লাস্টিকের বোতল সংগ্রহ করত। শ্রীমতি ভগবতী পারীকের (সহ বিভাগ সংযোজিকা, মহিলা মণ্ডল, শ্রীগঙ্গানগর বিভাগ) উদ্যোগ ও প্রেরণার কারণে আজ এইসব যুবক আত্মসম্মানের সাথে রাস্তার ধারে ঠেলা লাগিয়ে (দোকান গাড়ি) তাদের পরিবারের ভরন পোষণ  করছে। কামারের কাজ করা গাড়িয়া কামারদের নামে কৃষক কার্ড বানানো হয়। ফলে তারা এখন ধানের মাণ্ডিতে কৃষি উপযোগী উপকরণ তৈরি করে আত্মসম্মানের সাথে জীবনযাপন করছেন।

মনের যদি সত্যিকারের সংকল্প থাকে এবং তা পূর্তির জন্য যদি কঠোর পরিশ্রম করা হয়, তবে পরিস্থিতি বদলাতে সময় লাগে না। সমাজের সহযোগিতা ও সঠিক দিশা নির্দেশ যে কারো অবস্থার পরিবর্তন ঘটানোর জন্য যথেষ্ট। যারা একসময় অন্যদের সামনে খাবারের জন্য হাত পাততো , ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে, যখন অনুপগড়ে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের প্রাথমিক শিক্ষা বর্গ আয়োজন করা হয়, সেখানে ৭ দিন যাব ১০০ স্বয়ংসেবককে খুবই আনন্দের সাথে ভোজন করিয়েছে। সমস্ত ভেদাভেদ ভুলে সমরসতার উদাহরণ সৃষ্টি করে আত্মনির্ভরতার দিকে অগ্রসর হচ্ছে এইসব বস্তি।

192 Views
अगली कहानी