नियमित अपडेट के लिए सब्सक्राईब करें।
অর্ক সাঁতরা | বারাণসী | উত্তর প্রদেশ
প্রাচীন পদ্ধতি ব্যবহার করে অনুর্বর জমিকে পুনরুদ্ধার করা।
ত্রিপুরার ছোট্ট ছেলে মুক্তির বংশীর সুর আর
নেপালের আশার ঢোলকের বোলে কৃষ্ণ ভজন শুনে মনটা আবেগাপ্লুত হয়ে গেল। উত্তর-পূর্ব
রাজ্যের এই শিশুদের দ্বারা হিন্দী ভাষার গান-বাজনা দেখে শুধু আমিই নই, গোশালার গরুগুলোও আমার সাথে নৃত্য করছিল। বারাণসীর কথাই বলি, বর্তমান আধুনিক সমাজে বস্তুবাদের দিকে অগ্রসর হওয়ার ফলে বিলুপ্তির দিকে
যাওয়া শিক্ষাব্যবস্থা, কৃষি পদ্ধতি ও বৈদিক পরম্পরার পুনর্জাগরণ
কেন্দ্র হল “সুরভী শোধ সংস্থান”।
‘সরল জীবন উচ্চ চিন্তা’কে সার্থক রূপ প্রদানকারী সঙ্ঘের স্বয়ংসেবক শ্রী সূর্যকান্ত জালান জীর প্রেরণাতে এই প্রকল্পটি ১৯৯২ সালে শুরু করা হয় জরাজীর্ণ গোশালাতে কিছু গাভী আর কসাইদের কাছ থেকে উদ্ধার করা কিছু অনুপযোগী গরুদের আশ্রয় ও সেবা সুশ্রুষার মধ্য দিয়ে। সময়ের সাথে সাথে এটিকে শিক্ষার সাথেও যুক্ত করা হয়েছে।
মহিলাদের স্বাবলম্বী করার প্রচেষ্টা
২০০০ সালে, স্বনির্ভর গোশালায় নির্মিত ছাত্রাবাসে উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলির নকশাল প্রভাবিত অঞ্চল থেকে বনবাসী উপজাতির ২২ জন ছেলেকে নিয়ে শুরু হয়েছিল। আজ ছাত্রাবাসে দুর্গম উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলির ৬০০ বিদ্যার্থী নিঃশুল্কে আধুনিক শিক্ষার সাথে সাথে সঙ্গীত, রান্না, জৈবিক কৃষি, গো-পালন, কৃষি বিজ্ঞান, জল ভূমি তথা পরিবেশ সংরক্ষণের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলিতে শুধু জীবন উপযোগী শিক্ষাই নয়, এর সাথে সাথে আতঙ্কবাদ, নকশালবাদ থেকে বহুদূরে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সভ্যতার মাঝে একতা ও সামঞ্জস্য স্থাপন করছে| এখান থেকে উঠে আসা সোনম ভুটিয়া সিকিম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন যিনি এম.ফিল করছেন। এখান থেকে কিছু শিশু সিকিম ও নাগাল্যাণ্ডে হিন্দী শেখাচ্ছে। জালান জী গর্ব করে বলেন যে এখান থেকে স্নাতক হওয়া নারবু লেপচা সিকিমের বনমন্ত্রীর সচিব। এখান থেকে সঙ্গীত শিক্ষা গ্রহণ করে সিকিমের সচ্কুম অল লেপচা তার ইউটিউব চ্যানেল সফলভাবে চালাচ্ছে।
সংস্থার পরিসরে ছাত্র-ছাত্রীদের ক্রীড়া মহোৎসবের প্রস্তুতি
বর্তমানে ছাত্রবাস পরিচালনাকারী সঙ্ঘের
প্রাক্তন প্রচারক শ্রী হরিশ ভাই বলেন যে উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলির সামাজিক অবস্থার
কারণে, অনেক শিশু কৃষক পরিবার থেকে, কিছু অনাথ এবং কিছু একক
অভিভাবকত্বের অবস্থা থেকে এসেছে। তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণী থেকে আসা শিশুদের কাছে
সংস্থাই তাদের পরিবার। উচ্চ শিক্ষা পর্যন্ত তাদের সার্বিক সহযোগিতা করা হয়।
সংস্থার চারটি ছাত্রাবাসে মোট ৪২৪ জন ছেলে ও
১৭৮ জন মেয়ে রয়েছে। স্বনির্ভরতার বীজ রোপনকারী এই কেন্দ্র শিশুদের মধ্যে
হিন্দিভাষী হওয়ার গর্ব জাগিয়ে তুলছে, এবং উজ্জ্বল ভবিষ্যতের
স্বপ্ন গড়ে তুলছে।
প্রতিটি পরিবার স্বাবলম্বী ও প্রত্যেক ব্যক্তি নিজের পরিশ্রমে এবং নিজের উদ্যোগে জীবিকা নির্বাহ করতে পারে সেই লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠানটি বিভিন্ন প্রকল্প আরম্ভ করেছে। গোশালার সংস্পর্শে এসে অনুর্বর কৃষিজমি, জলের অভাব, বেকারত্ব, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি বিষয়ক জটিলতা ইত্যাদি সমস্যা গ্রামবাসীদের সামনে উঠে আসে। কয়েক মাসের প্রচেষ্টায় প্রাচীন পদ্ধতি অবলম্বন করে অনুর্বর জমিতে গোমূত্র আর গোবর ব্যবহার করে জমিকে পুষ্ট করা, পাহাড় থেকে আসা বৃষ্টির জল সংগ্রহ করার জন্য জায়গায় জায়গায় পুকুর, বাঁধ, নালা নির্মাণ করে জল সংরক্ষণে উৎসাহ প্রদান করা হয়। ফলে অনুর্বর কৃষিজমি উর্বর ও সবুজ হয়ে ওঠে আর গ্রামে জৈবিক কৃষি, নার্সারী, বৃক্ষরোপণের বিষয়ে আগ্রহ বৃদ্ধি হয়। গো-পালন থেকে শুরু করে কৃষির বিভিন্ন ক্ষেত্রে উপার্জনের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়। এছাড়াও শিক্ষা প্রদানের জন্য বিভিন্ন জায়গায় বহু মাধ্যমিক ও উচ্চ বিদ্যালয় খোলা হয়।
সংস্থানের প্রমুখ কার্যকর্তা শ্রী
জটাশঙ্কর জী জানান যে কৃষি ফলন হ্রাসে
উদ্বিগ্ন চাষিদের উন্নত প্রযুক্তির চাষের বিষয়ে প্রশিক্ষিত করে বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির
শাকসবজি, ফল এবং বনস্পতি সংরক্ষণ করা হয়। আজ শুধুমাত্র
তপোবন শাখায় ৬০,০০০ গাছ-পালা রয়েছে, যেখানে ২৫ রকমের ফল ও সবজি, ২০ রকমের ভেষজ উদ্ভিদ, পশুখাদ্য, মশলা ইত্যাদি উৎপাদিত হচ্ছে। নিজ হাতে কাজ করা, গাছ-পালা লাগানো, গোসেবা করার ফলে ছাত্রাবাসের শিশুরা স্বাভাবিকভাবেই প্রকৃতিপ্রেমী হয়ে ওঠে।
আজ গ্রামীণ বা শহুরে ক্ষেত্রে খাদ্যের অভাব নেই কিন্তু নারীদের প্রতি শ্রদ্ধা ও শিশুদের নানান দাবি বাড়ির মায়েদের নাজেহাল করে ছাড়ে। এছাড়াও পারিবারিক হিংসা, স্বামীদের মাদক আসক্তি বাড়িতে ঝগড়ার জন্ম দেয়। সবিতা মৌর্য, যিনি গত ৬ বছর ধরে এখানে কাজ করে চলেছেন, গর্বের সাথে বলেন যে লকডাউনের সময়ও আমাদের মেশিনের কাজ বন্ধ হয়নি। এখন পরিবারের মধ্যে আত্মসম্মান আর বাচ্চাদের খুশি দুটোই তাদের হাতে। রাজলক্ষ্মী, দুর্গা, আশার মতো প্রায় ৫০০ মহিলা নিঃশুল্ক সেলাই প্রশিক্ষণ নিয়ে এখান থেকে অর্থও উপার্জন করছে। সংস্থাটিতে পাপড়, আচার, মশলা, মোরব্বা ইত্যাদি গৃহ উদ্যোগ থেকে স্বাবলম্বী হওয়া গ্রামীণ মহিলাদের জীবন স্তরে পরিবর্তন এসেছে।
গ্রামীণ পরিবেশে সংস্থার মাধ্যমে ২৮ দিন ধরে
ডগমগপুর আর মির্জাপুর প্রকল্পে নিঃশুল্ক স্বাস্থ্য শিবিরের আয়োজন করা হয়। যেখানে
ডাক্তার এস.কে. পোদ্দারের মত আরও অনেক ডাক্তার তাদের মূল্যবান সময় দিয়ে
স্বাস্থ্য এবং মৃগীরোগ সম্পর্কে সচেতনতায় বড় পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। নিঃশুল্ক
এই চিকিৎসায় এখনও পর্যন্ত প্রায় ৫০০০ লোক উপকৃত হয়েছে আর প্রত্যেক শিবিরে প্রায় ১১০০ মানুষ এই সেবা থেকে লাভান্বিত হচ্ছে।
ভারতীয় সংস্কৃতি অনুসারে, গোমাতার শরীরে সমস্ত দেবতার বাস, যার প্রত্যক্ষ উদাহরণ হল
এই প্রকল্প, যা গোশালা থেকে শুরু হয়েছিল এবং আজ বিভিন্ন
ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের উদাহরণ হয়ে উঠছে।
नियमित अपडेट के लिए सब्सक्राईब करें।