नियमित अपडेट के लिए सब्सक्राईब करें।
ডা মধু কপূর | কচ্ছ, | গুজরাত
এমন এক সময়ে, জানি না, নিয়তি আমাদের ভাগ্যে কি লিখেছিল যে কিছুক্ষণের মধ্যেই আমাদের সব কিছু ধুলিসাৎ হয়ে গেল আর রয়ে গেল গায়ে দেওয়ার জন্য শুধু অনন্ত আকাশ আর ধরিত্রীর শয্যা৷ ঘরবাড়ি, বাসন-কোসন, জামাকাপড় যা কিছু আমরা দীর্ঘ চল্লিশ বছর ধরে জমিয়েছিলাম তা আবর্জনার স্তুপে পরিণত হয়েছে৷ কচ্ছে (গুজরাত) বাইশ বছর আগে হওয়া ভয়ানক ভূমিকম্পে যা সর্বনাশ হয়েছিল তার বর্ণনা শুনিয়ে চপরেড়ি গ্রামের বর্তমান সরপঞ্চ শ্রী দামজি ভাইয়ের চোখ এখনও ভিজে যায়৷ কিন্তু পরক্ষণেই অটলনগরে পাকা বাড়ি, চওড়া রাস্তা, স্কুল বিল্ডিং, পঞ্চায়ত ভবন ও গ্রামের মাঝামাঝি মাতা রানীর বিশাল মন্দিরের দিকে যখন তাকান তো গর্বের সাথে বলেন চপরেডির অটলনগরের পুনর্নিমাণের কাহিনী৷ আপনি কি জানেন? এই বিধ্বংসী ভূমিকম্পে বেশিরভাগ গ্রাম ভগ্নাবশেষে পরিণত হয়ে যাওয়াতে চৌদ্দটি গ্রামকে সেবাভারতী –‘গুজরাত সেবা ইন্টারন্যাশনালে’র সাহায্যে পুনর্স্থাপিত করেছে৷ চপরেড়ি এইসব গ্রামের মধ্যেই একটা গ্রাম আছে যা সমস্ত সুবিধার সঙ্গে এখন অটলনগর হয়ে গেছে৷
২৬শে জানুয়ারী যখন সারা
ভারত ৫২তম গণতন্ত্র দিবস পালন করছে তখন সকাল ৮টা বেজে ৪৬ মিনিটে গুজরাতের কচ্ছ
জেলায় এক ভয়ঙ্কর ভূমিকম্প হয়। রিয়ক্টার স্কেলে ৭.৭ তীব্রতা সম্পন্ন এই ভূমিকম্প
দু’মিনিট ধরে চলে আর ১৩৮০৫
জন তাতে নিহত হয়। হাজার হাজার গ্রামের মধ্যে একটি গ্রাম ছিল চপরেডি। ভূমিকম্পের
পরে গ্রামে থাকা লোকজনের মধ্যে ৩০০ পরিবার সর্বশান্ত হয়ে গিয়েছিল। দশ জন লোক প্রাণ
হারায় আর সমস্ত গ্রাম ধ্বংসস্তুপে পরিবর্তিত হয়ে যায়।
কিন্তু যেখানে বিনাশ ঘটে
সেখানে সৃজনের অঙ্কুরোদ্গমও হয়। ভূমিকম্প যাদের সম্পূর্ণ গ্রাস করে ফেলে তাদের
বাদ দিয়ে, চপরেড়ি গ্রাম বাকিদের
থেকে বিধাতা যা যা কেড়ে নিয়েছিল, ঈশ্বরের দূত হয়ে এই কার্যকর্তারা দিন রাত পরিশ্রম করে তাদের
সব কিছু ফিরিয়ে দেয়। যেখানে পুরোনো গ্রাম ছিল সেখান থেকে একটু দূরেই খালি জমিতে
নতুন করে গ্রাম গড়ে তোলা হয়। ২০০১-এ এই গ্রামের ভূমিপূজন এবং ২০০৪-তে উদ্ঘাটণ
হয়। নতুন গ্রাম নাম পেল অটলনগর। নতুন নির্মাণের এই কার্য সংরচনার গুরু দায়িত্ব
পালন কারী কচ্ছ জেলার রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের তৎকালীন বিভাগ কার্যবাহ শ্রী মহেশ ভাই ওঝা বলেন, এই কাজ খুব একটা সহজসাধ্য ছিল না। চপরেড়ি-সহ
অনেক গ্রাম ধ্বংসস্তুপ হয়ে গিয়েছিল, মৃত্যুও তার তাণ্ডব চালায়, কিন্তু যারা বেঁচে গিয়েছিল
তাদের বেঁচে থাকাটাও খুব দুঃসাধ্য ছিল। বিশেষ করে বাচ্চাদের লেখাপড়া চালু রাখার
জন্য স্কুল বিল্ডিং মেরামত করার প্রয়োজন ছিল। তিনি বলেন যে, কচ্ছের চৌদ্দটি গ্রামের
সাথে জামনগর, বানাসকাঁঠা, পাটণে ধ্বংস হয়ে যাওয়া বাষট্টিটি নতুন বিদ্যালয় ভবন সমাজের সহযোগিতায় নতুন
ভাবে তৈরি করা হয়।
আমরা সবাই জানি যে একটি
গ্রামকে নির্মাণ করতে গেলে শুধু কিছু দিন নয় বরং কয়েক বছর লেগে যায়। বিনাশ আর
নির্মাণের মাঝে এই দুই বছর বাঁশের ওপর কিছু বিছিয়ে, সামান্য বাসন ও বিছানা সম্বল করে, পাথরের উনুনে খাওয়ার
রান্না করে লোকেরা যে কষ্টকর জীবনযাপন করেছিল সেই প্রতিকূল সময়ে সঙ্ঘের
স্বয়ংসেবকরা নিরন্তর তাদের পাশে ছিল। প্রান্তের সম্পাদক শ্রী গিরিশ ভাই বলেন, আমরা এই পরিবারগুলিকে
রেশন, বাসন-পত্র, বিছানা এবং অন্যান্য
প্রয়োজনীয় জিনিস সরবরাহ করার সাথে সাথে তাদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস ও স্বাভিমানের
সাথে বেঁচে থাকার সুযোগ করে দিয়েছি। এই পুরো নির্মাণ কাজে কিছু প্রযুক্তিগত লোক
ছাড়া বাইরে থেকে কেউ আসেনি। গ্রামবাসীরা নিজেরাই তাদের গ্রাম গড়ে তোলে। শ্রমিকের
কাজের পাশাপাশি যারা যে কাজ পারে তার সেই কাজই যত্নের সাথে করে। এর ফলে তারা
নিজেরাই নিজেদের বাড়ি তৈরি করার সন্তুষ্টির সাথে সরকারি দরে পারিশ্রমিকও পায়।
কাজ শুরু হওয়ার পরে উনুনে জ্বালিয়ে রুটিতে লেগে থাকা স্বাভিমানের গন্ধ তাদের
কষ্ট দূর করে দেয়।
আসুন এখন ফিরে যাই চপরেড়ি
গ্রামের সরপঞ্চ দামজী ভাইয়ের কাছে যার চোখে সেবা ভারতী গুজরাতের প্রতি শুধু
কৃতজ্ঞতা আর কৃতজ্ঞতা। তিনি বলেন, কার্যকর্তারা আমাদের গ্রামে ঈশ্বরের দূতের মত এসে আমাদের
সকল সুখ দুখের ভার নিজেদের কাঁধে তুলে নেয়। আমাদের কল্পনার থেকেও সুন্দর গ্রাম
নির্মাণ করে দেয়। বোধহয় একেই বলা হয়— মহাবিনাশের ধরিত্রীতেও সৃজনের অঙ্কুর।
যোগাযোগ : নারণভাই বেলাণী
মো. ন.- 9727732588,
9428294365
नियमित अपडेट के लिए सब्सक्राईब करें।