सब्‍सक्राईब करें

क्या आप ईमेल पर नियमित कहानियां प्राप्त करना चाहेंगे?

नियमित अपडेट के लिए सब्‍सक्राईब करें।

জল এল, জীবন এল ডোঙ্গরীপাড়া(মহারাষ্ট্র)

বিজয়লক্ষ্মী সিংহ | মহারাষ্ট্র

parivartan-img

ডোঙ্গরীপাড়াতে আজ সাত দশকের প্রতিক্ষার অবসান হল। গ্রামের মানুষ যেন খুশিতে নেচে উঠেছে। ঘরে ঘরে জল পৌঁছানো সোলার পাম্পটিকে অপলক দৃষ্টিতে দেখতে থাকা ৭৩ বছরের শান্তাবাঈ খাঞ্জোডের দুটি চোখে অশ্রুধারা থামার নাম নিচ্ছিল না। মুম্বাই থেকে মাত্র ৮০কিলোমিটার দূরে পালঘর জেলার এই গ্রামের মানুষ ৭২বছর ধরে গ্রামে পানীয় জলের অপেক্ষা করছিল। গর্ভবতী মহিলা হোক বা ১২বছরের বাচ্চা, পাহাড়ের উপরে থাকা ডোঙ্গরীপাড়া অঞ্চলের বাসিন্দারা ভাঙা চোরা রাস্তা দিয়ে দেড় কিলোমিটার নীচে কুয়োঁ থেকে পানীয় জল নিয়ে আসা ছাড়া উপায় ছিল না। তার উপর বর্ষাতে যাতায়াতের রাস্তাটিও বন্ধ হয়ে যেত। না জল, না বিদ্যুৎ, না সরকারী বিদ্যালয়- তার উপর সেখানে ৩৩টি পরিবারের বস্তিতে মাত্র ৭জন কৃষক তাদের জমিতে চাষ করতে পারত। এই কাহিনীর পাঠকদের বিশ্বাস হবে না যে আজ এই গ্রামেই কৃত্রিম ঘাসের(এস্ট্রোটার্ফ) খেলার ময়দান রয়েছে। মহিলাদের সেলাই শেখানোর জন্য সেলাই প্রশিক্ষণ কেন্দ্র আছে, ছোট্ট শিশুদের জন্য 'মাধব বালক সংস্কার কেন্দ্র' রয়েছে। সেখানে কম্পিউটারও শেখানো হয়। অধ্যয়নের জন্য একটি ছোট পুস্তকালয়ও রয়েছে। আর হ্যাঁ, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পানীয় জল... প্রত্যেক আটটি ঘরের মাঝে একটি করে টেম্পলেট আছে, শুধু তাই নয় এখন প্রত্যেক বাড়িতে বিদ্যুৎও রয়েছে। 


                  

এই সবই সম্ভব হয়েছে- রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের প্রতিষ্ঠাতা পূজনীয় ডাঃ কেশব বলিরাম হেডগেওয়ারের স্মৃতিতে ভয়ন্দরে স্থাপিত বহুমুখী প্রকল্প কেশব সৃষ্টি’-র দ্বারা পরিচালিত গ্রাম বিকাশ যোজনার প্রয়াসে। ডোঙ্গরীপাড়ার বিকাশ যাত্রার শিল্পী হলেন মুম্বাই মহানগরের প্রাক্তন কার্যবাহ বিমল কেডিয়া মহাশয় বলেন, এই বিকাশ যাত্রায় প্রতি পদক্ষেপে গ্রামবাসীদের সহযোগিতা পাওয়া গেছে। জলের ট্যাঙ্কি থেকে ঘরে ঘরে পাইপ লাইন নিয়ে যাওয়া থেকে শুরু করে সমাজ মন্দিরের নির্মাণ পর্যন্ত গ্রামবাসীরা রাত-দিন শ্রমদান করে কাজটি সম্পন্ন করেন। কেবল এইটুকুই নয়, কাজের অগ্রগতির সাথে সাথে  গ্রামবাসীদের সহযোগিতারও বৃদ্ধি ঘটে। একটা সমিতি তৈরী করে সকলেই একটা নির্ধারিত অর্থরাশি এই সমস্ত কাজের জন্য জমা করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।

দেড় কিলোমিটার নীচে তৈরি কুঁয়ো থেকে জলের ট্যাঙ্কি পর্যন্ত পাইপ আনা আর বাড়ি বাড়ি তা পৌঁছানোর জন্য সোলার প্যানেল লাগানোর কাজ পুণের একটি ব্যক্তিগত কম্পানি গ্রাম ঊর্জা-র মাধ্যমে হয়। এই এতবড় একটা খরচের পর গ্রামবাসীরা কেশব সৃষ্টি-র কাছে থেকে আর অর্থ  নিতে অস্বীকার করে। এমনকি নদী থেকে ক্ষেত অব্দি জল নিয়ে আসা এবং তার রক্ষণাবেক্ষণের খরচ গ্রামবাসীরা নিজেরাই বহন করার সিদ্ধান্ত নেন। প্রকৃতি ডোঙ্গরীপাড়াকে অনুপম সৌন্দর্য প্রদান করেছিল। কিন্তু বিড়ম্বনা ছিল এমন যে ভরপুর বর্ষার পর পালঘর জেলার এই গ্রামের মানুষ এক বিন্দু জলের জন্য ব্যাকুল হয়ে থাকত। কৃষকদের আয় বড়জোড় মাসে ২০০০টাকা হত। বাধ্য হয়ে এই গ্রামের পুরুষদের নীচের গ্রাম সান্সণে-তে অন্যের জমিতে মজদুরের কাজ করতে হত। ছোটদের পড়ার জন্য কিলোমিটার দূরে বাড়াতে থাকা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যেতে হত। বিদ্যালয় থেকে ফেরার পর গ্রামে পড়া এবং পড়ানোর কোন সুযোগ ছিল না। কিন্তু আজ ডোঙ্গরীপাড়াতে বিকাশের প্রবাহ ইতে শুরু করেছে। গ্রামের মধ্যে অবস্থিত সামূহিক ভবন যাকে সমাজ মন্দির নাম দেওয়া হয়েছে, সেখানে ৮টি সেলাই মেশিনে মহিলাদের সেলাই প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। ভারতীয় স্টেট ব্যাঙ্কের সহযোগিতায় কেনা ২টি কম্পিউটারের মাধ্যমে ছাত্রদের প্রারম্ভিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। ডোঙ্গরীপাড়াসহ ১০টি গ্রামের জন্য সতত প্রযত্নশীল কেশব সৃষ্টি-তে গ্রাম বিকাশের কাজে বিস্তারক রূপে নিয়োজিত সচিন জী বলেন, গ্রামবাসীর কাছে এই সমাজ মন্দির একটি পূজাস্থল। গণেশ উৎসব থেকে শুরু করে বিবাহ আদির জন্য এর প্রাঙ্গণ সবার জন্য নিঃশুল্ক। প্রতি সপ্তাহে এখানে যে সৎসঙ্গ হয়, তার কারণে গ্রাম ধীরে ধীরে নেশামুক্ত হচ্ছে। নিয়মিত তাড়ি খাওয়া বারলী জনজাতি পরিবারে মদটাকে কমবেশি ছেড়েই দিয়েছে আর ধান, সব্জি উৎপাদন করে এই বছরে এক থেকে দেড় লক্ষ টাকা উপার্জন করে। গ্রামের মাঝে উচুঁতে তৈরী ওয়া ট্যাঙ্কির কারণে সারা বছর জলের সমস্যা মিটেছে। এক বছরের  আগের ঘটনা এই পরিবর্তন বোঝার জন্য যথেষ্ট। প্রতিষ্ঠিত লেখক রতন শারদাজী ডোঙ্গরীপাড়ার বিকাশ যাত্রার কথা তার লেখার মাধ্যমে তুলে ধরার জন্য যখন সেখানে পৌঁছালেন তখন ওনার স্ত্রী শ্যামাজী কৌতুহলবশত মহিলাদের জিজ্ঞেস করেন তাদের আর কি চাই? গ্রামবাসীরা যে উত্তর দিলেন তাতেই এই কাহিনীর সারবস্তু লুকিয়ে আছে। ঐ বনবাসীদের কথা হল, আমাদের যা চাহিদা তা সবকিছু আমরা পেয়ে গেছি এখন পরবর্তী পথ আমরা নিজেরাই যেতে  সমর্থ।

 

491 Views
अगली कहानी