सब्‍सक्राईब करें

क्या आप ईमेल पर नियमित कहानियां प्राप्त करना चाहेंगे?

नियमित अपडेट के लिए सब्‍सक्राईब करें।

দীপ হতে দীপ জ্বলে, মতিনগর গুজরাট

দেবরঞ্জন মণ্ডল | গুজরাট

parivartan-img

মায়ের সাথে চায়ের দোকানে গ্রাহকদের চা পরিবেশন করার সময় মনীষা প্রায়ই ভাবত সে কি কখনো দশম শ্রেণী পাশ করতে পারবেসে প্রথম থেকেই গণিত এবং বিজ্ঞানে খুব দুর্বল ছিল, বাবার কাছ থেকে কিছু আশা করাও ছিল বৃথা।  রিকশাচালক বাবা, একদিকে অশিক্ষিত, অপরদিকে মদের নেশা তাকে সুস্থ থাকতে দিত না।  গুজরাটের মণিনগর শহরের কাঁকরিয়া রামানন্দ কোটের বস্তিতে বসবাসকারী এই মেয়েটি দ্বাদল শ্রেণী ভাল নম্বর পেয়ে পাশ করে আর বিয়ের পর এখন ফ্যাশন ডিজাইনার হিসাবে কাজ করছে। সেখানে তার চা দোকানের দায়িত্ব তার বাবার উপর, কারণ তিনি মদ ছেড়ে দিয়েছেন।


তেমনই কিছু গল্প চেতন রাওয়ালের‌ও। বিয়েতে ঢোল বাজিয়ে সংসার চালানো মনসুখ রাওয়ালের একমাত্র ছেলে চেতনের পড়ালেখায় খুবই আগ্রহ ছিল। কিন্তু বাবা তার আয়ের অর্ধেক মদের পিছনে ঢালতেন। তাই টিউশনির টাকা আসবে কোথা থেকে? আজ মণিনগরের বিখ্যাত ফিজিওথেরাপিস্ট ডাঃ চেতন রাওয়াল অতীতের দিকে ফিরে তাকাতেও চান না। মিল্লাত নগর বস্তির বাসিন্দা সেলিম টানা তিন দিন কোচিংয়ে না আসায় শিক্ষক নিজেই তাঁর বাড়িতে পৌঁছে যান। টাইফয়েডে আক্রান্ত এই শিশুর সম্পূর্ণ চিকিসাকরানোহয়েছে।আজ, এই মুসলিম যুবক, মণিনগরের একটি মিলে কাজ করে পুরো পরিবারের খরচ ভালভাবে বহন করছে। ঈশ্বরের পরে, কেবল সঙ্ঘের স্বয়ংসেবক এবং তার শিক্ষক কানুভাইয়ের সামনে মাথা নত করে। এই তিনটি ভিন্ন গল্পে, এই শিশুদের জীবনে সুখী পরিবর্তনের সূত্রগুলি এক জায়গায় গিয়ে সংযুক্ত হয়, আর তা হল শ্রী গুরুজী জ্ঞান মন্দির। মণিনগরের মিউনিসিপ্যাল স্কুলে বিকাল ৫টা থেকে ৮টা পর্যন্ত চলমান এই টিউশন সেন্টারটি কেবল কোনও সাধারণ কোচিং নয়, বরং একটি সূর্য যা দরিদ্র ও অভাবী শিশুদের জীবনে শিক্ষা, সংস্কৃতি এবং স্বনির্ভরতার আলো নিয়ে আসে।


 কানুভাই রাঠোর, সঙ্ঘের প্রাক্তন শাখা সেবা কার্যকর্তা, এবং মধুভাই বারোট, যিনি বর্তমানে ভাগ সেবা প্রমুখ তাদের প্রচেষ্টায়, ১৪ বছর আগে শুরু করা এই শিক্ষাকেন্দ্রে শিশুদের শিক্ষার জন্য না কোনও ফি দিতে হয় আর না শিক্ষকরাও বেতন নেন। এই কেন্দ্রের সাথে থাকা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা শুধুমাত্র সেবার সাথে যুক্ত। কখনও কখনও তারা আর্থিক সহায়তাও করে।

 এটি প্রায় ১৪ বছর আগের কথা, যখন কানুভাই একজন শাখার সেবা কার্যকর্তা ছিলেন এবং সেবা বসতিতে শিশুদের জন্য বিনামূল্যে মডার্ন ম্যাগাজিন নামে একটি গণিত এবং বিজ্ঞান বই বিতরণ করতেন। কিন্তু শিশুরা সেই বই থেকে কিছুই শিখতে পারেনি।  সরকারি স্কুলের অনিয়মিত পড়ালেখার কারণে তাদের ভীত এতটাই দুর্বল ছিল যে দশম শ্রেণী পাশ করা তাদের পক্ষে কঠিন ছিল। তাই এই শিশুদের উন্নত শিক্ষা প্রদানের লক্ষ্যে, শ্রী গুরুজী জ্ঞান মন্দির নামে এই টিউশন সেণ্টারটি ২০০৯ সালে একটি স্বেচ্ছাসেবকের বাড়ির একটি ছোট কক্ষে সাতটি শিশু নিয়ে শুরু হয়েছিল। সময়ের সাথে সাথে শিশু, শিক্ষক ও ক্লাসের সংখ্যাও বাড়তে থাকে।  তারপর একটি বেসরকারী স্কুল আরাধনা পাবলিক স্কুল এই টিউশন সেণ্টারের জন্য বিকাল ৫টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত বিনামূল্যে কক্ষ খুলে দেয়। পড়াশোনার পাশাপাশি এখানে শিশুদের মূল্যবোধের শিক্ষাও দেওয়া হয়। রাষ্ট্রপতি পুরস্কারপ্রাপ্ত শিক্ষক জয়েশ ঠক্কর, যিনি বছরের পর বছর ধরে এখানে শিক্ষকতা করছেন, তিনি বলেন যে আমরা শিশুদের বিভিন্ন সামাজিক কার্যকলাপের সাথেও যুক্ত করি। শ্রীগুরু পূর্ণিমা, রক্ষা বন্ধন, জন্মাষ্টমী, নবরাত্রি, ভারতীয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আমরা এখানে বাচ্চাদের সাথে উদযাপন করি। ধর্মীয় প্রবন্ধ, আলোচনা, দেশাত্মবোধক গান, গল্প বলার মতো প্রতিযোগিতাও বিভিন্ন সময়ে আয়োজন করা হয়।  শিশুরা বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থানের পাশাপাশি বিধানসভা দর্শন, হাসপাতালে তাদের মাধ্যমে ফল বিতরণ এবং রক্ষা বন্ধনের মতো কার্যক্রমের মাধ্যমেও তাদের ব্যক্তিত্বের বিকাশ ঘটানো হয়। দশম এবং দ্বাদশ শ্রেণীর পরে তাদের জন্য ক্যারিয়ার কাউন্সেলিং সেশনেরও আয়োজন করা হয়। বাচ্চাদের অভিভাবকদের সাথে দেখা করার জন্য অভিভাবক সভার অনুষ্ঠানও করা হয়। কিছু শিক্ষকও অভিভাবকদের সাথে দেখা করতে নিয়মিত বসতিতে যান।


 এই কেন্দ্রে আগে শুধু দশম শ্রেণীর ছেলেমেয়েদের পড়ানো হতো। কিন্তু সময়ের চাহিদা মাথায় রেখে এখন নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত চালু করা হয়েছে। মণিনগরের একটি মিউনিসিপ্যাল স্কুলে চলা শ্রী গুরুজী জ্ঞান মন্দিরে ১০০টিরও বেশি ছাত্র অধ্যয়ন করে, যারা খোখরা, ঘোড়াসার ভাটওয়া, বহরমপুরার মতো দূরবর্তী এলাকা থেকে আসে।  কিছু ছেলেমেয়ে দশ কিলোমিটার সাইকেল চালিয়ে পড়াশোনা করতে আসে।

 আসলে শিক্ষা, সংস্কৃতি ও জ্ঞানের ত্রিবেণী সঙ্গম মানে শ্রী গুরুজী জ্ঞান মন্দির, এতে কোনো সন্দেহ নেই।

435 Views
अगली कहानी