नियमित अपडेट के लिए सब्सक्राईब करें।
প্রবীর রায় | পুনে | মহারাষ্ট্র
ছাত্রদের যোগব্যায়াম অনুশীলন।
অষ্টম শ্রেণী অর্থাৎ ১৩-১৪ বছর বয়স এমন সময় যখন কিশোরেরা জীবনের জটিলতাগুলি শিখতে শুরু করে। এই অপরিণত বয়সে চার ছেলে স্কুলের পাশের একটি মাঠে বিয়ারের ভাঙা বোতল নিয়ে সহপাঠী মনুর ওপর কয়েকবার হামলা চালায়। কাঁচের টুকরো পেটে ঢুকে যাওয়ার পরও সৌভাগ্যবশত মনু বেঁচে যায়। কিন্তু ২০১২ সালের ১০ সেপ্টেম্বর, এই চার কিশোরের জন্য জীবনের সমস্ত দরজা বন্ধ হয়ে যায়। এই ঘটনার পর পুণের মুলশী ব্লকের পিরঙ্গুট গ্রামের সরকারি স্কুল চারজনকেই স্কুল থেকে বের করে দেয়। দু'বছর শিশু সংশোধনাগারে কাটিয়ে যখন সে পিরঙ্গুট ফিরে আসে, ততদিনে অপরাধী হওয়ার কলঙ্ক তার কপালে লেগে গিয়েছিল। গ্রামের মানুষের কাছ থেকে তারা যে ঘৃণা ও অবহেলা পেয়েছে তা হয়তো তাদেরকে আবার অপরাধের অন্ধকারময় জগতে ঠেলে দিত যদি না হিম্মত শালা তাদের হাত ধরে তাদেরকে সঠিক পথ না দেখাত। ব্যতিক্রমী এই "হিম্মত বিদ্যালয়" পুণের মুলশী ব্লকের অম্বডবেট নামক গ্রামে রাষ্ট্রীয় সর্বাঙ্গীন গ্রামবিকাশ সংস্থানের দ্বারা পরিচালিত হয়। এই বিদ্যালয় এই ধরনের ড্রপআউটদের শিক্ষা দিয়ে মাধ্যমিক বোর্ড পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে সাহায্য করে, যারা অপরাধ, মাদকাসক্তি এবং অন্যান্য প্রতিকূলতার কারণে তাদের পড়াশোনা মাঝপথে ছেড়ে দেয়। কিছু ছেলেমেয়ে তো ১০ থেকে ১২ বছরের দীর্ঘ ব্যবধানের পরে আবার এখান থেকে দশম শ্রেণীতে পড়ে।
1. হি1. হিম্মত শালার শ্রেণীকক্ষের একটি দৃশ্য।
শ্রী অনিল ব্যাস, সঙ্ঘের পশ্চিম মহারাষ্ট্র প্রান্তের প্রান্ত সেবা প্রমুখ এবং স্বয়ংসেবক নিতিন ঘোড়কের প্রচেষ্টায়, এই অভিনব বিদ্যালয়টি ১৫ই জুলাই ২০১২-তে ৮ জন বালকে নিয়ে শুরু হয়েছিল এবং এর নাম দেওয়া হয়েছিল 'হিম্মত শালাʼ। এই স্কুলে একটি মাত্র শ্রেণী পড়ানো হয়, সেটি হল দশম শ্রেণী। যেখানে সারা দেশের বিভিন্ন বোর্ডের ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা করে। এখানে পড়াশোনার পাশাপাশি মোবাইল মেরামত, দুগ্ধ খামার, কৃষিকাজ, বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি মেরামতের মতো কর্মসংস্থানমুখী প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়। এখান থেকে পড়াশোনা করার পর, মনীশ আঠবালে (পরিবর্তিত নাম), যে বর্তমানে হিঞ্জেওয়াড়ি আইটি পার্কে ক্যাটারিং কোম্পানির কাছে রুটির চুক্তি নিচ্ছে, সে ঐ ছেলে যে বিয়ারের বোতল দিয়ে মনুকে সবচেয়ে বেশি আঘাত করেছিল৷ পুণের সম্ভ্রান্ত কুলকর্ণী পরিবারের একমাত্র ছেলে সুশীলের বিরুদ্ধে সহ্যাদ্রি স্কুলের প্রধান শিক্ষকের এখন আর কোনো অভিযোগ নেই। কয়েক বছর আগে, স্কুল পিকনিকে রাগের মাথায় সুশীল সিগারেটের লাইটার দিয়ে পুরো বাসে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিল। আজ সেই যুবকই নাসিকের একটি নামকরা কলেজ থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং-এর পড়া সম্পূর্ণ করছে। এই শিশুদের পরিবর্তনের কৃতিত্ব স্কুলের প্রতিদিনের যোগ, অনুশাসন ও সংস্কারযুক্ত দিনচর্যা এবং দেশাত্মবোধে পরিপূর্ণ শিক্ষা ব্যবস্থার কারণে। এই বক্তব্যটি এই বিদ্যালয়ের শুরু থেকেই মারাঠি বিষয়ের শিক্ষক প্রদীপ পাটিল মহাশয়ের। তিনি বলেন, এখানে শিশুদের নিয়মিত ব্যায়াম ও যোগের পাশাপাশি জমিতেও কাজ করানো হয়। আমরা বইয়ের পড়াশোনার চেয়ে বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের উপর বেশি জোর দিই।
এটা ঠিক যে শিল্পের বিকাশ জীবনে সমৃদ্ধির দরজা খুলে দেয় কিন্তু ঠিক একই পথে কখনও কখনও ধ্বংসও গোপনে প্রবেশ করে। পুণে থেকে ৪০ কিমি, দূরে মুলশী ব্লকে অনেক কারখানা চালু হওয়ায় এখানকার জমির দাম আকাশ ছুঁতে শুরু করে। যারা জমি বিক্রি করে নতুন নতুন লাখপতি হয়েছে তারা না নিজেদের সামলাতে পারছে, না তাদের সন্তানদের। এইসব কিশোরেরা নানা ধরনের মাদক দ্রব্যের শিকার হয়ে অপরাধের পথে পা বাড়ায়। ২০১১-১২ সালে পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয় যে মুলশি ব্লক কিশোর অপরাধে মহারাষ্ট্রে প্রথম স্থানে পৌঁছেছিল। অন্যদিকে রাজ্য সরকারের নিয়ম অনুযায়ী অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত কোনও শিশুকে ফেল না করানো নীতির ফলস্বরূপ পড়াশুনায় খুব দুর্বল হওয়া নবম শ্রেণীর ছাত্রছাত্রীদের বিদ্যালয়গুলি ফেল করাতে শুরু করে, যারা নবম শ্রেণীতে বিদ্যালয়ের কাছে বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। এমনই কিছু ছাত্রের হাত ধরে হিম্মত শালা। এর সঞ্চালক শ্রী যোগেশ কোলভণকর বলেন যে কিছু এমন ছাত্রও এখানে আসে যারা নবম শ্রেণীতে ঠিকমতো পড়তেও জানে না। কেউ কেউ ১০ বছর পড়াশোনা ছাড়ার পর এখানে আসে। এই ধরনের ছাত্রদের দশম শ্রেণী পাস করাতে দুই থেকে তিন বছরও সময় লেগে যায়। তিনি সন্তোষ কাকড়েদের উদাহরণ দেন, যে ২১ বছর বয়সে এখানে ভর্তি হয়। ড্রাগাশক্তির শিকার এই যুবক দুই বছর কঠোর পরিশ্রমের পর চারটি বিষয়ে পাস করে। এখন সন্তোষ নিজের বাড়িতে কৃষিকাজ সামলাচ্ছে, তিনি রোগ থেকে সুস্থ হয়ে এখন স্বাভাবিক জীবনযাপন করছে। হিম্মত শালা, যেটি গত ৮ বছরে ১৬০ টিরও বেশি কিশোরের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের ভিত্তি স্থাপন করে দেশের একটি অভিনব বিদ্যালয়ের খ্যাতি অর্জন করেছে।
नियमित अपडेट के लिए सब्सक्राईब करें।