सब्‍सक्राईब करें

क्या आप ईमेल पर नियमित कहानियां प्राप्त करना चाहेंगे?

नियमित अपडेट के लिए सब्‍सक्राईब करें।

ছোট্ট শিশুদের মুখরিত কল্লোল (আনন্দ)

বনমালী দাস | রাজকোট | মহারাষ্ট্র

parivartan-img

           সমাজের খনি থেকে হীরাকে বের করে, সুন্দর আকৃতি প্রদান করে উপযুক্ত জায়গাতে পৌঁছানোই হল সংস্থার উদ্দেশ্য

  নিজের মনের মাটিকে এতটা উর্বর করো যাতে দুঃখের প্রতিটি বিন্দু থেকেও অঙ্কুরিত হয়ে একটি ছায়া ও ফলদায়ী বটবৃক্ষে রূপে সমগ্র দেশের কাজে লাগে। এই দৃঢ় সংকল্প এবং পবিত্র ভাবনার বাস্তব রূপ হল রাজকোটের শ্রী পুজিত রুপাণি মেমোরিয়াল ট্রাস্টএক সময়কার বিদ্যার্থী পরিষদের প্রান্ত সংগঠন সম্পাদক আর আজকের গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী বিজয় রুপাণি এবং তাঁর স্ত্রী শ্রীমতি অঞ্জলি দেবী এই ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠা করেন তাদের প্রয়াত পুত্র পুজিতের স্মৃতিতে। মাত্র ৩ বছর বয়সেই ছোট্ট পুজিতকে ভগবান তার কাছে টেনে নেন। রুপানি পরিবার এই কষ্টকে চেপে রেখে বিগত ২৭ বছর ধরে অসহায় শিশুদের কাছে জ্ঞানের অমৃত বিতরণ করে যাচ্ছে। রাস্তার আবর্জনা কুড়ানো পথ শিশু আর ঝুপড়ি বস্তিতে বসবাসকারী অভাবী এবং মেধাবী শিশুদের মুক্তাঙ্গন দেওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছেন, যেখানে তারা তাদের নিজেদের ভবিষ্যতকে নিজের পছন্দ মত গড়ে তুলছে। সঙ্ঘের আদর্শ ও সংস্কারে সংস্কারিত শ্রদ্ধেয় বিজয় জী এবং অঞ্জলি দিদি শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও নারী উন্নয়নের কথা মাথায় রেখে ১৭/১২/১৯৯৪ তারিখে এই প্রকল্পটি পঞ্জীকরণ করান। সর্বাত্মক উন্নয়নের উপর ভিত্তি করে ১২টি প্রকল্প একযোগে এখানে চলছে। রাজকোটের ৭৬টি ঝুপড়ি বস্তির মধ্যে ময়ুর নগর, লোহা নগর, মোরবী রোড প্রভৃতি স্থানে মোট ৬টি কেন্দ্র রয়েছে। যেখানে "পথ শিশু এবং ওপেন হাউস প্রকল্প"-এ ৬ থেকে ১৪ বছর বয়সী সমাজের পিছিয়ে পড়া আর ময়লা কুড়ানো বাচ্চাদের পুষ্টিকর খাবার দেওয়ার সাথে ব্যবহারিক জ্ঞান, পড়শোনা, ধর্মীয় জ্ঞান, শিল্প ও কারুকলা, বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ, কম্পিউটার ইত্যাদি প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। অঞ্জলি দিদি প্রতিটি শিশুর মধ্যে নিজের পুজিতকে দেখেন, প্রশিক্ষণের সময় এই শিশুদের অদ্ভুত হাতের কারুকাজ দেখে অবাক হয়ে যান।


ট্রাস্টের মুখ্য ভূমিকায় রয়েছেন অমিনেষ ভাই। তিনি বলেন- এই প্রকল্পের মাধ্যমে এখন পর্যন্ত ৪৩০ টিরও বেশি শিশু স্বাবলম্বী হয়েছে এবং তাদের জীবনযাত্রার মান ক্রমশঃ উন্নত হচ্ছে।

কয়লা খনিতে যেমন ঝলমলে হীরার চমকে কে না আকর্ষিত হয়??? এই হীরাগুলিকে বাছাই করে পালিশ করে এবং তাদের গন্তব্যে নিয়ে যাওয়ার আরেকটি প্রকল্প হল "জ্ঞান প্রবোধিনী প্রকল্প"। এই প্রকল্পটি শুরু হয়েছিল ২০০০ সালের ১৫ই জুলাই। ট্রাস্টি অন্যতম সদস্য মেহুল ভাই বলেন- দ্বাদশ শ্রেণীতে ভালো নম্বর পেয়ে তাদের কাঙ্খিত গন্তব্যে সাফল্য অর্জনকারী এই শিশুদের হাসিমুখ, আনন্দ আমাদের মন সেই সফলতার উসাহে ভরিয়ে দেয়। এখনও পর্যন্ত ২৯০ টিরও বেশি শিশু তাদের পিতামাতা এবং রাজকোটের নাম উজ্জ্বল করেছে। বর্তমানে ৯৬ জন শিশু উন্নতির পথে অগ্রসর হয়েছে।



অঞ্জলি দিদি এই শিশুদের সফলতার কথা বলতে গিয়ে গর্বে বুক ভরে উঠে। দিদি বলেন, প্রথম ব্যাচের এক রিকশাচালকের মেয়ে আজ তক্ষশিলা কলেজের অধ্যাপিকা। এখান থেকে স্নাতক হওয়া সঞ্জয় ও পূর্বীশা বর্তমানে জইডস রিসার্চ সেন্টারের বিজ্ঞানী। একজন চপ্পল বিক্রেতার ছেলে বিজয় আজ ইনফোসিসে একজন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার৷ এক শ্রমিক পরিবারের মেয়ে অঙ্কিতা আজ একজন ইএনটি সার্জন। "জ্ঞান প্রবোধিনী প্রকল্প"-এ প্রবেশিকা পরীক্ষায় গণিত, বিজ্ঞানের মতো গুরুত্বপূর্ণ সব বিষয়ে পরীক্ষা নেওয়া হয় এবং মেধা তালিকায় নাম আসা শিশুদের ঘর পরিদর্শন, পরিবেশ এবং আর্থিক অবস্থার বিষয় পর্যালোচনা করা হয়। কার্যকর্তাদের দ্বারা সাক্ষাকার এবং যথাযথ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পরে, নির্বাচিত ছাত্রদের তাদের গুরুজনদের দ্বারা আনুষ্ঠানিক দীক্ষা দেওয়া হয়। এই মেধাবী ছেলেমেয়েরা গভীর অধ্যয়নের মাধ্যমে দশম ও দ্বাদশ বোর্ড পরীক্ষায় রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে মেধা তালিকায় স্থান অর্জন করে দেশের শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়ে জায়গা করে নেয়। অষ্টম থেকে দ্বাদশ শ্রেণীর পরেও যারা লক্ষ্য পথে অগ্রসর হতে থাকে, তাদের প্রকল্প দ্বারা দত্তক নেওয়া হয়। বাড়ি থেকে যাতায়াতের জন্য সাইকেলও সরবরাহ করা হয়। অনেকই যারা এই প্রকল্পের মাধ্যমে তাদের ভাগ্য গড়েছেন তারাও আজ এই প্রকল্পে কাজ করছেন, যাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য রয়েছেন ডেণ্টিস্ট প্রিয়া, সিভিল ইঞ্জিনিয়ার পূর্বী, অঞ্জনা এবং ব্যাঙ্ক অফ বরোদার অফিসার প্রেম জোশী৷


খেলা আর খেলনা ছাড়া শৈশব কিভাবে সম্ভব?? কিন্তু যে সব শিশুদের জ্ঞান হওয়ার সাথে সাথেই খাদ্যের জন্য সংঘর্ষ করতে হয়, তাদের শৈশবের কাছে শ্রমই একমাত্র খেলা। ট্রাস্টের ম্যানেজার ভাবিন ভাই বলেন, রঙিন খেলনা আর কবিতা আবৃত্তিতে ভরা একটি টয় ট্রেন যখন এই শিশুদের রঙহীন পৃথিবীতে আসে, তখন তাদের হৃদয়-মন নাচতে থাকে। তাদের আনন্দ ও উচ্ছাস পুরো বস্তিতে প্রতিধ্বনিত হতে শুরু করে। "বাল স্বপ্ন রথ" প্রকল্প, যেখানে শিক্ষকরা একটি খেলনা ট্রেনে (মারুতি ভ্যান) ইলেকট্রনিক, বিনোদনমূলক এবং জ্ঞানবর্ধক খেলনা নিয়ে যায়। মাসের প্রথম ১৫ দিন, গাড়িটি সময় মত খেলনা নিয়ে সমস্ত এলাকা জুড়ে ভ্রমণ করে এবং দ্বিতীয় পাক্ষিকে, এটি টিভি, ভিডিও অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জ্ঞানবর্ধক গল্প দেখায়। ছয় হাজারের বেশি শিশুকে ভালো অভ্যাস ও সমাজ সম্পর্কে সচেতন করে তোলা এই প্রকল্পটি শিশুদের পুষ্টিকর খাবারের সঙ্গে স্মরণীয় শৈশবও প্রদান করছে। সমন্বয়কারী নীরদ ভাই বলেন এএখনও র্যন্ত ৩৫০০ টিরও বেশি শিশু রেলওয়ে স্টেশন প্রকল্পের চাইল্ড হেল্প লাইন এবং চাইল্ড হেল্প ডেস্কের মাধ্যমে সুরক্ষা এবং সহায়তা পেয়েছে।


করোনার সময় যেখানে সাধারণ রোগ নির্ণয়ের জন্য সব হাসপাতাল বন্ধ ছিল, সেখানে প্রকল্প চিকিসা কেন্দ্র অনবরত সেবা দিয়ে যাচ্ছিল। এই প্রকল্পে সমস্ত মৌলিক সুযোগ-সুবিধা পাশাপাশি মাত্র ৫ টাকার বিনিময়ে সাধারণ রোগ নির্ণয় থেকে ক্যান্সার নির্ণয়ের শিবির আয়োজন করা হয়। যেখানে দেশের প্রখ্যাত ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ ডা. দুষ্যন্ত মণ্ডলিকও তার সেবা দিতে আসেন। এখন পর্যন্ত ৫৫ হাজারেরও বেশি রোগী উপকৃত হয়েছেন। "সঞ্জীবনী কার্ড" এবং "চিরঞ্জীবী যোজনা" অর্থের অভাবে অসহায় রোগীদের জন্য মহৌষধীর মতো কাজ করে। প্রকল্পে নিবন্ধিত সকল শিশুকে বিনামূল্যে চিকিসা দেওয়া হয়। ঘরের মেরুদণ্ড নারীকে শক্তিশালী, ও স্বাবলম্বী করে তুলতে রাজদীপিকা প্রকল্প”-এর মাধ্যমে ১৫০০ নারী কর্মসংস্থানের সুযোগ পেয়েছেন। যার সুবিধা সেবা বস্তির বোনেরা পাচ্ছেন।

শিক্ষার মাধ্যমে অর্থনৈতিক বৈষম্য দূর করে সমাজে সমরসতার ভাব জাগরণ কারী এ প্রকল্প সমাজকে সুষ্ঠ ও সার্বিক উন্নয়নের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। যা আমাদের দেশের জন্য আদর্শ উদাহরণ হয়ে উঠতে পারে।

288 Views
अगली कहानी