सब्‍सक्राईब करें

क्या आप ईमेल पर नियमित कहानियां प्राप्त करना चाहेंगे?

नियमित अपडेट के लिए सब्‍सक्राईब करें।

বিপর্যয়ে দেবদূতের বেশে (কেরল)

সোমকান্ত | কেরল

parivartan-img

প্রকৃতির উপাসক, তীর্থযাত্রী তথা আধ্যাত্বিক সাধকদের সর্বদা আকর্ষণকারী ভূমি কেরলে ১৬ই অক্টোবর ২০২১ ইন্দ্রের প্রকোপে যে বিনাশ লীলা সংঘটিত হয়, তাতে গ্রামের পর গ্রাম জলমগ্ন হয়ে যায়। সকাল পাঁচটা থেকে শুরু হওয়া ভীষণ বৃষ্টিপাতে কাঁচা বাড়ি, বাসন-কোসন, বিছানাপত্র, গবাদি পশুসমস্ত কিছুকে নিজের সাথে বয়ে নিয়ে যায়। ভূস্খলনের কারণে রাস্তা দিয়ে চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। বড় বড় পাথর ও গাছ রাস্তা অবরুদ্ধ করে। চারদিকে শুধু কাদা আর কাদা। ২১ জন প্রাণে মারা যায় বাকি অনেকে নিজেদের সর্বস্ব হারিয়ে অসহায় হয়ে পড়ে। এই বিপর্যয় থেকে কিভাবে নিস্তার পাওয়া যেতে পারে সে বিষয়ে সরকার যখন দিশাহীন, ঠিক সেই সময়ে সব থেকে অধিক প্রভাবিত ক্ষেত্র ইড্ডুকী, কোট্টায়ন ও থানাবিট্টাতে দেবদূতের ন্যায় কেরল সেবা ভারতীর কার্যকর্তারা উপস্থিত হন। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ৬০০রও অধিক কার্যকর্তা ঘর, কুয়ো, রাস্তা ইত্যাদি পরিষ্কারের কাজ করার সাথে সাথে খাদ্যদ্রব্য, বাসন, বিছানাপত্র বিতরণ করে। শুধু এইটুকুই নয়, তার সাথে স্বয়ংসেবকেরা দিনরাত পরিশ্রম করে যাতায়াতের জন্য অস্থায়ী সেতু নির্মাণও করে।


  ১৭ই অক্টোবর অতিবৃষ্টি থামার পরে যে ১৬টি বাড়ি বর্ষার হাত থেকে বেঁচে গিয়েছিল, সেইসব পরিবারের লোকজন ফিরে এসে দেখে যে ৫ ফুট কাদার নিচে ডুবে থাকা তাদের সমস্ত জিনিসপত্র নষ্ট হয়ে গেছে। সারা জীবনের সঞ্চিত এই সব কিছু নষ্ট হতে দেখে তাদের চোখের জল থাম ছিলই না। তখন স্বয়ংসেবকেরা হাতে কোদাল, বেলচা নিয়ে সেইসব ঘর পরিষ্কার করার অভিযান শুরু করে। বিপর্যস্ত পরিবারের মানুষজনও সেই অভিযানে সম্মিলিত হয়। কোট্টিকল, কোকায়র, মনীমেল সহ সকল ৮টি পঞ্চায়েতের হাজারো বাড়ির স্বচ্ছতার পর সেগুলি বাসযোগ্য করে তোলা হয়। সেবা ভারতীর পুর্ণকালীন কার্যকর্তা জিডিন রমেশ বলেন যে, “৪৫০টি বাড়ি ৩১০টি কুঁয়ো ও ছোট ছোট ফ্যাক্টরি পরিষ্কার করার সাথে সাথে রাস্তার উপর থেকে গাছ পাথর সরিয়ে তা যাতায়াতের উপযোগী করে তোলা হয়। সেনাবাহিনীর মত স্বয়ংসেবকেরাও সেই কাজ কোক্কায়রে গ্রামবাসীর সহযোগিতায় করে দেখায়।সেখানকার গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য নিচূর তঙ্গচন বিস্মিত হয়ে যায় যে, কোথা থেকে খাকি হাফপ্যাণ্ট পরে সঙ্ঘের স্বয়ংসেবকেরা তাদের গ্রামে এসে সেতু নির্মাণের কাজে লেগে পড়ে, আর এটি ছিল তাদের গ্রামে ঢোকার একমাত্র মাধ্যম যা বন্যাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে গিয়েছিল। দিনরাত পরিশ্রম করে ৫ফুট চওড়া আর ১২মিটার লম্বা একটি অস্থায়ী সেতু কাঠ বাতা ও অন্যান্য স্থানীয় সরঞ্জাম দিয়ে তৈরি করা হয়। এমনই তিনটি সেতু কার্যকর্তারা নির্মাণ করেন। নিচূর বলেন, “সেতু গ্রামবাসীর যোগানের মাধ্যমে হয়নি বরং সেবা ভারতীর কার্যকর্তাদের নিরলস পরিশ্রমে নির্মিত হয়।নারায়ণ ধর্ম যোগ আশ্রমের সাধকেরা কার্যকর্তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে। মন্দিরের আশেপাশে জমে থাকা চার ফুট উঁচু কাদার কারণে মন্দিরের দরজা ও খোলা অসম্ভব হয়ে যায়, কার্যকর্তারা মন্দিরের সাথে সাথে সেখানে থাকা কুঁয়োও পরিষ্কার করে। এইসব কাজ দেখে স্থানীয় বরিষ্ঠ ব্যক্তি পাল্লিকাত্থবুদ্ধ তার নিজের পাম্পের শ্রমিক ও সরঞ্জাম কুঁয়ো পরিস্কারের জন্য দেন।


   সেবা ভারতীর কার্যকর্তাদের এই সেবাযাত্রা এখানেই না থেমে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের 200 থেকে আড়াইশো ব্যক্তিদের কাছে দৈনিক ভোজন সরবরাহ করে। বাসন, বিছানাপত্র, গ্যাস উনুন ও মশারি সহ সমস্ত নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীও দেওয়া হয়।

   ধর্ম-জাতির ঊর্ধ্বে উঠে নরনারয়ণের সেবাই সেবাব্রতী কার্যকর্তাদের দেখে শৈলি থমাস নামে এক খ্রিস্টান মহিলা নিজের ঘরকেই সেবা ভারতীর কেন্দ্র করার জন্য দিয়ে দেন।


   রাস্তার সমস্যা তখনও শেষ হয়নি, কেননা রাস্তার উপর পড়ে থাকা বড় বড় পাথর, গাছের জন্য যাতায়াতের উপায়ই ছিল না। এর জন্য ৬০০ কার্যকর্তা সম্মিলিত ভাবে রাস্তা তৈরির কাজ শুরু করে। নিরন্তর প্রচেষ্টাতে ১২টি রাস্তা মেরামত করা হয়। সেবা ভারতীর কার্যকর্তাদের নিরলস প্রচেষ্টার ফলে সবচেয়ে বিপর্যস্ত জেলা কোট্টায়ম, ইড্ডুকী ও থানাবিট্টাতে জনজীবন স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে।

415 Views
अगली कहानी