सब्‍सक्राईब करें

क्या आप ईमेल पर नियमित कहानियां प्राप्त करना चाहेंगे?

नियमित अपडेट के लिए सब्‍सक्राईब करें।

সেই জীবনই সার্থক যে অপরকে জীবন দিতে পারে

রোহিনী চ‍্যাটার্জী | ইন্দোর | মধ্যপ্রদেশ

parivartan-img

১৭ বছর বয়স তো পৃথিবী ছেড়ে যাওয়ার বয়স হতে পারে না। কিন্তু সে তো মৃত্যুর সামনে প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে দাঁড়িয়ে ছোট্ট ছোট্ট শিশুদের খালি পিপা(ড্রাম) ও লাঠির সাহায্যে মৃত্যুর হাত থেকে বের করে আনে, তারা সবাই ভয়ে কেঁদে যাচ্ছিল। ২০০৫ সালের ৭ই আগস্ট ইন্দোরের মারুতি নগর থেকে যখন ১৭ বছরের কিশোর স্বেচ্ছাসেবক মনোজ চৌহানের মৃতদেহ কাঁধে তোলা হয়, তখন গোটা ইন্দোরবাসীর চোখে জল চলে আসে। সমস্ত কলোনির কোন ঘরেই দুদিন উনুন জ্বলেনি। সাধারণতন্ত্র দিবসে অনন্য সাহসী পুরষ্কারে ভূষিত আত্মবলিদানী মনোজ চৌহানের কাহিনী তরুণ প্রজন্মকে দেশের জন্য বাঁচতে শেখায়। যৌবনের প্রথম পদক্ষেপে যে বয়সে সকলেই রঙিন স্বপ্নের সংসার সাজায়, সেই বয়সে মনোজ ১৮ জনের জীবন বাঁচাতে গিয়ে নিজের জীবনকে মৃত্যুর কাছে সঁপে দেয়।


ঘটনাটি ১৭ বছর আগেকার, ২০০৫ সালের ১লা আগস্ট বর্ষার জল বন্যায় পরিণত হয়ে ইন্দোরের নিচু জনপদে প্রবেশ করেছিল। মারুতি নগর ছিল বাণগঙ্গার সেভার রোডের এমনই একটি নিচু বসতি। এই এলাকার ঘরবাড়িতে এমনভাবে জল ঢুকতে শুরু করে যে বাসন-কোসন, খাট-বিছানাপত্রের সাথে ছোট ছোট শিশুরাও জলের তোরে ভেসে যেতে শুরু করে। প্রশাসনিক সাহায্য সেখানে পৌঁছানোর আগেই সেখানকার সঙ্ঘের একটি নিত্য শাখার স্বয়ংসেবক মনোজ তার সঙ্গী বাবন পাণ্ডে ও সুরেশ বাথাকে সাথে নিয়ে উদ্ধার কাজ শুরু করে দেয়। তারা খালি টিনের ড্রাম, টিউব সংগ্রহ করে মানুষের জীবন বাঁচানোর উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। মনোজ যখন ছোট বাচ্চাদের তাদের বাড়ি থেকে উদ্ধার করে নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যাচ্ছিল, তখন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের নগর সম্পর্ক প্রমুখ ডঃ আনন্দ প্রকাশ মিশ্রের সতর্কবার্তা তার কানে ধ্বনিত হচ্ছিল। মনোজ, তোমার হার্টের ভাল্ভ নষ্ট হয়ে গেছে, তুমি জল থেকে দূরে থাকবে আর খুব বেশি পরিশ্রম করবে না, নয়তো এটি তোমার জন্য মারাত্মক হতে পারে। কিন্তু ধীরে ধীরে এই বার্তা মনোজের কান থেকে হারিয়ে যেতে থাকে তার পরিবর্তে শাখায় প্রতিদিন গাওয়া গানের পঙক্তিগুলি প্রতিধ্বনিত হতে থাকে..."সেবা হ্যায় যজ্ঞ কুণ্ড সমীধা সম হাম জলে"। মনোজ সকাল ৪টা থেকে মাঝরাত পর্যন্ত নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলিকে সাহায্য করতে থাকে। এই দেশপ্রেমিক যুবক ১৮ জনকে ভয়ঙ্কর জলের কবল থেকে নিরাপদে বের করে আনে কিন্তু ততক্ষণে তার ফুসফুসে জল ঢুকতে শুরু করে। তারপরও পরেরদিন সে কলোনির পরিবারের চাহিদার তালিকা তৈরি এবং রেশনসহ অন্যান্য সামগ্রী বিতরণে ব্যস্ত থাকে।


কেশব নগরের তকালীন সিটি এক্সিকিউটিভ অনিল পঞ্চওয়াল বলেন, এত পরিশ্রমের কারণে মনোজের দুর্বল শরীর হাল ছেড়ে দিয়েছিল। তার শরীরে নিউমোনিয়া এমন মাত্রায় ছড়িয়ে পড়ে যে তাকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয় এবং মাত্র দুই দিনের মধ্যে এই রোগের কারণে সে জীবন যুদ্ধ হেরে যায়।

মনোজ যখন তার দিব্যাঙ্গ বাবা উমরাও সিং চৌহান, মানসিকভাবে দুর্বল ভাই সোনু ও তার কান্নারত মাকে রেখে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে তখন মারুতি নগরের একটিও বাড়িতে দুইদিন কোন উনুন জ্বলেনি। একই কলোনিতে বসবাসকারী লক্ষ্মী দেবী মনোজকে স্মরণ করে বলেন, "সেই ছেলেটি ছিল ঈশ্বরের প্রেরিত দেবদূত, যে আমার সাত বছরের নাতিকে জল থেকে বের করতে নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়েছিল।" মৃত্যুর সময় তার পকেটে একটি তালিকা পাওয়া যায়, যাতে পীড়িত পরিবারের সদস্যদের নাম ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র লেখা ছিল।

ভারতীয় শিশু কল্যাণ পরিষদ ২০০৭ সালে যখন গণতন্ত্র দিবসে মনোজ চৌহানকে তার অনন্য সাহসিকতার জন্য সম্মান জানানোর সিদ্ধান্ত নেয়, ততদিনে মনোজের এই পৃথিবী ছেড়ে চলে যাওয়ার পর দুই বছর কেটে গেছে। শহরের বিখ্যাত চার্টার্ড অ্যাকাউণ্ট্যাণ্ট রাধে শ্যাম সোমানি এবং ডঃ শৈলেন্দ্র জৈনকে স্মরণ করে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন, যারা এই পুরস্কারের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে চিঠি লেখেন এবং প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করেন। তারা বলেন যে, মনোজ গণতন্ত্র দিবসে হাতির উপর বসতে না পারলেও সে চিরকাল ইন্দোরের মানুষের হৃদয়ে শ্রদ্ধার কেন্দ্র হয়ে রয়েছে।

যোগাযোগ:- অশোক অধিকারী

চলভাষ:- 91 9300898166

293 Views
अगली कहानी